গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা - গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপায়ে বন্ধুর আড্ডায়, গল্প করতে বা ক্লান্তি দুর করতে চা খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। চা ছাড়া যেন চলেই না। আমরা বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন রকম ভাবে চা পান করে থাকি। আমরা যে চা খেয়ে থাকি তা সাধারণত ব্লাক টি। কেউ আর কড়া লিকার, কেউ লাল চা, কেউ চিনি ছাড়া আবার কেউ চিনি ও দুধ মিশিয়ে চা খেয়ে থাকি। আমাদের কি গ্রিন টি সম্পর্কে কোন ধারন রয়েছে। আজ আমি এই গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করবো।
চা যদি খেতেই হয় তাহলে গ্রিন টি খাওয়া আমাদের উচিত। আমরা যদি নিয়ম মেনে গ্রিন টি পান করতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের নানা দিক থেকে উপকৃত হতে পারে। তাই আমাদের সর্বপ্রথম গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।
ভূমিকা
গ্রিন টি বর্তমানে আস্তে আস্তে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে। যারা স্বাস্থ্য সচেতন তারা গ্রিন টি পান করা শুরু করেছে। কারন গ্রিন টি তে রয়েছে নানান পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের সুস্থ্য রাখতে বিশেষ ভুমিকা পালক করে।গ্রিন টি প্রস্তুত হয় কিভাবে
গ্রিন টি প্রথমত চা-গাছের সবুজ সতেজ পাতা রোদে শুকিয়ে তাওয়ায় বা পাত্রে সেকে গ্রিন টি প্রস্তুত করা হয়। এ সময় এর রং হালকা হলদে সবুজ বর্নের হয়। এ চায়ে পলিফেলন ও ফ্ল্যাভোনেয়েড নামক দুটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা চা তৈরির পরও অক্ষুন্ন থাকে।আরো পড়ুন: দুধ চা খাওয়া ক্ষতিকারক দিক সমূহ
কেন গ্রিন টি খাওয়া প্রয়োজন
গ্রিন টি খেলে শরীর সতেজ ও উৎফুল্ল থাকে। শরীর সুস্থ রাখে গ্রিন টি। এছাড়াও ওজন কমায়, হার্ট ভাল রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে ইত্যাদি কারনে গ্রিন টি খাওয়া প্রয়োজন।আরো পড়ুন: কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
গ্রিন টি-তে কি কি উপাদান রয়েছে
গ্রিন টি এর মধ্যে লিফেলন ও ফ্ল্যাভোনেয়েড নামক দুটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়াও ভিটামিন এ, ভিটামিন-বি, বি৫, ভিটামিন-ডি, ই, সি, সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিংক, ক্যাফেইন, মেঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যা মানব দেহ সুস্থ শক্তিশালি থাকলে সাহায্য করে।গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা
আপনি যদি নিয়মিত গ্রিন টি খেতে পারেন তাহলে বিভিন্ন উপকারিতা আপনি নিজে নিজেই বুঝতে পারবেন। আসুন গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা সমূহ জানা যাক।১. হজম শক্তি স্বাভাবিক রাখে
গ্রিন টি এনার্জি ও স্ট্যামিনা ধরে রাখতে সাহায্য করে। গ্রিন টি পান করলে আমাদের হজন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি পানিশুন্যতা রোধ করতে গ্রিন টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।২. রক্ত প্রবাহ মাত্রা ভাল রাখে
আপনি নিয়মিত গ্রিন টি পান করতে পারলে শরীরের রক্ত প্রবাহ মাত্রা ভালো রাখে এবং ধমনি শিথিল রাখে।৩. দাঁতের ক্ষয় রোধ করে
নিয়মিত গ্রিন টি খাওয়ার ফলে দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে বিশেষ সহায়থা পালন করে গ্রিন টি।৪. ওজন কমাতে সাহায্য করে
আপনি সঠিক নিয়মে যদি গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে এটি ওজন কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।৫. ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে
আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত গ্রিট টি পান করতে পারেন তাহলে আপনার ত্বক ভাল থাকবে। গ্রিন টি পান করার ফলে ত্বকে কোলাজেন ভাল থাকে এবং ত্বকের টান টান ভাব আরো বৃদ্ধি পায় এতে করে আপনার বার্ধক্য দুরে থাকবে যদি আপনি নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন তাহলে।৬. হৃদযন্ত্র ভালো রাখে গ্রিন টি
গ্রিন টি পান করার ফলে আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ্য ও ভাল থাকবে।আরো পড়ুন: নিয়মিত বাদাম খেলে কি হয়
শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়েছে। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের হোম পেজ ফলো করতে পারেন। কোন মন্তব্য থাকলে কমেন্টে জানিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ
৭. চোখের নিচের কালো দাগ দুর করে
আপনি প্রতিদিন নিয়মিত যদি গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে আনার চোখের নিচের কালো দাগ থাকলে সেটি আস্তে আস্তে দুর হয়ে যাবে। আপনার চোখ ভাল রাখে গ্রিন টি।৮. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে
আপনি যদি গ্রিন টি নিয়ম মেনে পান করতে পারেন তাহলে এটি আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে খুব ভাল কাজ করে।৯. ভাল টোনার হিসাবে কাজ করে
আপনি যদি গ্রিন টি কে ত্বকের টোনার হিসাবে ব্যবহার করতে চান তাহলে গরম পানিতে গ্রিন টি ফুটিয়ে তা ঢান্ডা করে একটি স্প্রে পটে সংরক্ষন করতে পারেন। এটি আপনার ত্বকের জন্য খুব ভাল কাজ করবে।১০. চুলের যত্বে
আপনি যদি গরম পানিতে গ্রিন টি ফুটিয়ে সেই পানি ঢান্ডা করার পর ছেকে নিবেন। এরপর আপনি চুলে শ্যাম্পু দিয়ে ঘোষে নিবন। তারপর গ্রিন টি মিশ্রিত পানি দিয়ে ভাল ভাবে ধুয়ে নিয়ে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং চুল পড়া কমে যায়।গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
গ্রিন টি পান করার কিন্তু নিয়ম রয়েছে। আপনি যখন তখন ভুলেও গ্রিন টি পান করবেন না। এতে করে হিতের বিপরিত হতে পারে। গ্রিন টি পান করার সঠিক নিয়ম হলো সকালে নাস্তার করার ৪৫ মিনিট পর এবং বিকালে নাস্তা করার পর পান করতে পারেন। রাতে যদি পান করতে চান তাহলে বিছানায় যাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘন্টা পূর্বে গ্রিন টি পান করুন। আপনি গ্রিন টি এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করতে পারলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি যখন ব্যয়াম করবেন তার পূর্বে গ্রিন টি পান করতে পারেন। এতেও খুব ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।গ্রিন টি এর অপকারিতা
আপনি অতিরিক্ত পরিমানে গ্রিন টি পান করা থেকে বিরত থাকুন। কফিতে ক্যাফেইন নামক একটি উপাদান রয়েছে আর গ্রিন টি এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ক্যাফেইন যা অতিরিক্ত পান করার ফলে আপনার ক্ষতি হতে পারে। রাতে ঘুমানোর পূর্বে অবশ্যই গ্রিন টি পান করা থেকে বিরত থাকুন। কারন আপনি যদি রাতে গ্রিন টি পান করেন তাহলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। এতে করে শরীর খারাপ হওয়ার প্রবনতা থাকে।উপসংহার
চা যদি খেতে চান তাহলে অবশ্যই গ্রিন টি পান করা উচিত। কেউ যদি নিয়মিত গ্রিন টি পান করে তাহলে তার শরীরের নানান সমস্যা সমাধান হওয়ার সাথে সাথে তাকে সুস্থ্য ভাবে বেচে থাকতেও সাহায্য করে গ্রিন টি। তাই আপনি আজ থেকেই গ্রিন টি পান করা শুরু করে দিতে পারেন।শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়েছে। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের হোম পেজ ফলো করতে পারেন। কোন মন্তব্য থাকলে কমেন্টে জানিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url