প্রতিদিন পরিমানমত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

বাদাম এমন একটি খাদ্য যা কোন গল্প আ আড্ডায় এর অবদান অনেক। বাদাম ছাড়া যেন কোড আড্ডা জমে উঠেনা। এটি যেমন একদিক মুখরোচক খাবার তেমনি অপর দিকে এর উপকারিতাও অনেক। আমরা যদি প্রতিদিন পরিমানমত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতাম তাহলে সবাই এই সামান্য বাবাদমকে তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতো।
 
প্রতিদিন পরিমানমত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আজ আমি বাদামের বিশেষ গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা করতে যাচ্ছি। তাই এই গরুত্বপূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এতে থেকে আপনি উপকৃত হয়ে অন্যকে আপনার মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দিন।

ভূমিকা

বাদাম খায় না বা বাদাম পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুজে পাওয়া যায়না। কোথাও ঘুরতে গিয়ে বসে বসে গল্প আড্ডায় বা বন্ধুদের সাথে এক সঙ্গে বসে গল্পকরার ক্ষেত্রে বাদাম খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। কিন্তু আমরা কি জানি বাদামের মধ্যে কি কি উপাদান রয়েছে। বাদামের মধ্যে যে উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সুস্থ্য থাকতেও সাহায্য করে।
 
আরো পড়ুন: পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা

বাদামে কি কি উপাদান রয়েছে

শরীরের বিভিন্ন উপকারিতা উপাদান ও পুষ্টিগুনের দিক থেকে বাদামের কোন বিকল্প নাই। আমাদের সুস্থ্যতার জন্য বাদাম খুব উপকারী একটি খাবার। বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন-ই, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম, ওমেগা-থ্রি, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও সেলেনিয়ামে পরিপূর্ণ হলো বাদাম।
 
আরো পড়ুন: কিভাবে লবঙ্গ খেলে উপকার পাওয়া যায়

প্রতিদিন পরিমানমত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

সব কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে একটি সীমা রয়েছে। কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। আপনি যদি পরিমান মত প্রতিদিন নিয়মিত বাদাম খেতে পারেন তাহলে এর উপকারিতা পাবেন ইনশাআল্লাহ। আসুন বাদাম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে বাদাম

আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত পরিমানমত বাদাম খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে। কারন বাদামে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিন থাকে যথেষ্ট মাত্রায় যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রন করতে ভূমিকা পালন করে।

ক্যান্সার নিয়ন্ত্রন করে বাদাম

বাদাম একটি আঁশ যুক্ত খাবার। এছাড়াও বাদামে রয়েছে ফোলিক অ্যাসিড এবং ফাইটিক অ্যাসিড। এই দুই অ্যাসিড কোলন ক্যান্সার সহ মৃত্যু ঘটাতে পারে এমন ক্যান্সারের ‍উপাদান নিয়ন্ত্রণ সহ ধ্বংস করে।

ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমায়

গবেষনায় দেখা যায় কেউ যদি প্রতিদিন নিয়মিত বাবাদ খেতে পারে তাহলে এতে থাকা বিভিন্ন উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও কেউ যদি প্রতি রাত্রে ১০-১৫ টি বাদাম পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে পারে তাহলেও তার ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমবে।

কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে

বাদামে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যার ফলে আপনি যদি প্রতিদিন বাদাম খেতে পারেন তাহলে আপনার হৃদপিন্ড ও রক্তের ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে বাদাম।

হৃদপিন্ড ভালো রাখে

বাদাম হৃদপিন্ডে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে হৃদপিন্ড সুস্থ্য ও ভাল রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

চোখ ও ত্বক ভালো রাখে বাদাম

বাদামে থাকা উপাদান আপনার চোখ ভালো রাখতে ভূমিকা পালন করে পাশাপাশি আপনার ত্বকের উজ্জলতা, মশৃণভাব বৃদ্ধি সহ ত্বকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে বাদাম।

হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক বাবাদ

বাদামে রয়েছে ক্যালশিয়াম যা আপনার শরীরের হাড় ও দাঁতের গঠন করে তা মজবুত রাখতে সাহায্য করে বাদাম।

হজম প্রক্রিয়া মজবুত করে

কারো যদি কাবারের পরে হজমে সমস্যা দেখা দেয় তাহলে নিয়মিত বাবাদ খেতে পারেন। যে নিয়মিত বাদাম খায় তার হজম প্রক্রিয়া ভাল থাকে।
 
আরো পড়ুন: কাচা কলা খাওয়ার উপকারিতা

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়

বাদাম মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। বাদাম স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বাবাদ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বাদামে থাকা উপাদান আপনার শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

বাদাম প্রতিদিন কতটুকু খাওয়া প্রয়োজন

এক তথ্যে যানা যায় একজন সুস্থ্য মানুষ প্রতিদিন ৩০ গ্রাম বাদাম খেতে পারেন। আপনি যদি বাবাদ থেকে বিভিন্ন ‍উপকারী উপাদান পেতে চান তাহলে প্রতিদিন ৩০ গ্রাম বাদাম খেলে যথেষ্ট।

অতিরিক্ত বাদাম খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে

১. বাদামে অনেক উপকারি উপাদান থাকলে কেউ যদি প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমানে বাদাম খায় তাহলে শরীরে ওমেগা-৬ অ্যাসিড বেশি পরিমান হয় এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে তা টক্সিক হয়ে যায়।

২. বাদামে থাকে ওমেগা-৬ যা বেশি পরিমানে গ্রহণ করলে হার্টের রোগ, অর্থাইটিস, ডায়বেটিস, এলার্জি সহ অ্যাজমার মত রোগ সৃষ্টি হতে পারে।

৩. অতিরিক্ত ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে প্রবেশের ফলে তা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডকে এন্টি ইনফ্লামেটরি হরমোনকে কনভাট করে। যার ফলে শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।

৪. বাদাম শরীরে প্রচুর পরিমানে ফাইটিক এসিড তৈরি করে। শরীর সরাসরি ফাইটিক এসিড হজম করতে পারেনা যার ফলে হজমে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

৫. আমাদের অনেকেরই অভ্যাস বাদাম খেতে হলে লবন চাই। এই লবন শরীরে ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিতে পারে।

উপসংহার

বাদাম খুব মুখরোচক খাবার গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম খাবার। যদিও এটি মুখরোচ খাবার এর পরেও এটি খাওয়ার ব্যপারে আমাদের শর্তক হওয়া জরুরী। আমরা যদি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খেতে থাকি তাহলে এটি আমাদের নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমতাবস্থায় আমাদের নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত।

শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক এই পোস্টটির মাধ্যমে আশা করি আপনি উপকৃত হবে। আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার শুভাকাঙ্খিকে পোস্টটি শেয়ার করুন। এবং আপনার মতামত কমেন্ট করুন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের মূল পেজ ঘুরে আসতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url