বাচ্চাকে লেখা পড়ায় মনোযোগী হওয়ার ২১টি উপায়

প্রিয় পাঠক আজ আমি আপনাদের মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছে। আমরা যারা অভিভাবক রয়েছি কম বেশি সবাই সব সময় চিন্তিত থাকি কিভাবে বাচ্চাকে লেখাপড়ায় মনোযোগী করা যায় এই বিষয় নিয়ে। তাই আপনি যদি এই পোস্টটি গুরুত্ব সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনি বাচ্চাকে লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়ার ২১টি উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

 
বাচ্চাকে লেখা পড়ায় মনোযোগী হওয়ার

বর্তমান যুগ সফলতার যুগ। এ সময় যে পিছিয়ে পড়ে বা পড়বে তাকে অনেক আপসোস করতে হয়। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপনি আপনার বাচ্চাকে ছোটবেলা থেকেই সেই ভাবে গড়ে তুলুন। আর একজন মানুষকে সফল হতে হলে শিক্ষার কোন ত্রুটি রাখা চলবেনা।

ভূমিকা

সকল অভিভাবকই চাই তার ছোট্ট সোনামনিকে সকলের মধ্যে সেরা হিসাবে। কিন্তু আমাদের কিছু ভুলে বা সঠিক গাইড লাইন না জানার কারনে আমরা ছেলে মেয়েদের পড়ায় মনোযোগী করতে পারিনা। বাচ্চাকে লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়ার পেছনে অভিভাবকের গুরুত্ব অপরিসীম।
 
আরো পড়ুন: একজন ভাল মানুষ হতে কি কি প্রয়োজন

বাচ্চাকে লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়ার ২১টি উপায়

আসুন কিভাবে বাচ্চাকে লেখাপড়ায় মনোযোগী করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

১. সন্তানকে জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়া শিক্ষা দেওয়া

আপনি আপনার সন্তানকে জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য আল্লাহর রহমতের বিশেষ প্রয়োজন। এছাড়াও যে যে ধর্মে বিশ্বাসী সব ধর্মেই জ্ঞান বৃদ্ধি সম্পর্কে আমল রয়েছে। তাই আপনি আপনার সন্তানকে জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়া শিক্ষা দিন। এটি অনেক কাজে লাগে।

২. সন্তানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা

আপনার সন্তান যে কাজ করে বা লেখাপড়া করলে তার প্রশংসা করুন। তাহলে দেখবেন আপনার সন্তানের মন ভাল থাকবে। সে লেখাপড়ায় মনোযোগী হবে।

৩. যোগব্যয়াম ও ব্যয়াম করানো

সন্তানকে যোগব্যয়াম ও ব্যয়াম করানোর অভ্যাস ছোট থেকেই শিক্ষা দিন। তাহলে সন্তানের শরীর ও মন দুটোই ভাল থাকবে এবং লেখাপড়ায় মনোযোগী হবে।
 
আরো পড়ুন: কিভাবে ভাল স্ত্রী হওয়া যায়

৪. অন্য শিশুদের সাথে তুলনা করবেন না

আপনি আপনার বাড়ীর আশেপাশের অন্যান্য শিশুদের সাথে আপনার সন্তানের তুলনা করবেন না। মনে রাখবেন আপনি যদি প্রতিনিয়ত এই ভুলটি করেন তাহলে আপনার সন্তানের মন ভেঙ্গে যাবে এবং মনের মধ্যে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেতে পারে।

৫. মারধর বা ভয় না দেখানো

আপনি আপনার সন্তানকে লেখাপড়া করার জন্য মারধর বা ভয় দেখাবেননা। আপনি যদি প্রতিনিয়ত এই ধরনের কাজ করতে থাকেন তাহলে সন্তানের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগ হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই এ ধরনের ভুল কখনো করবেন না।

৬. অন্য শিশুদের সঙ্গে পড়ালেখা করার সুযোগ তৈরি করা

আপনি যদি আপনার সন্তানকে অন্যান শিশুদের সাথে পড়ালেখা করার তাহলে দেখবেন তারা আনন্দের সাথে লেখাপড়া করছে। তাই অন্য শিশুদের সাথে লেখাপড়ার সুযোগ দিতে পারেন।

৭. উপহার প্রদান করা ও উপহারের লোভ দেখানো

আপনি আপনার সন্তানকে বলতে পারেন লেখাপড়ায় ভাল করলে তার পছন্দের কোন উপহার দিবেন এবং এ ধরনের যদি প্রতিশ্রুতি দেন তাহলে দেখবেন আপনাআপনি আপনার সন্তানের লেখাপড়ায় মনোযোগী বেড়ে যাবে।

৮. আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া

আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে কিভাবে শিক্ষা লাভ করলে আপনার সন্তান আনন্দ পায় সেদিকে। আর আপনি যদি এই দিকটি অবলম্বন করতে পারেন তাহলে দেখবেন সন্তানের লেখাপাড়ার প্রতি মনোযোগ বেড়ে যাবে।
 
আরো পড়ুন: একজন ভাল স্বামী হওয়ার উপায়

৯. শিক্ষা বিনিময়

আপনি আপনার সন্তানকে শুধুমাত্র পাঠ্য বইয়ের মধ্যে রাখবেন না। আপনি আপনার সন্তান কি শিখলো সে সম্পর্কে জানতে চান। সে বিষয়ে আপনাও জানা থাকলে তার সাথে আলোচনা করুন। এভাবেও বাচ্চাকে শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করা যায়।

১০. ইউটিউব শিখুন

বর্তমান সময়ে ইউটিউব এর মাধ্যমে অনেক শিক্ষামুলক ভিডিও পাওয়া যায়। সেগুলো আপনি আপনার সন্তানকে দেখাতে পারেন। তাহলে দেখবেন আপনার সন্তানের শিক্ষা লাভের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

১১. নিজেও শিখুন

আপনি আপনার সন্তানের সাথে কোন একটি বই নিয়েও নিজে পড়তে পারেন তাহলে একদিকে যেমন আপনারও কিছু নতুন জানা হবে তেমনি আপনার সন্তানেরও শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

১২. বিভিন্ন মাধ্যম একত্রিকরণ

আপনার সন্তান যদি একটি বই বারবার পড়তে থাকে তাহলে তার পড়ার প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। তাই আপনি বিভিন্ন মাধ্যম একত্রিকরন করলে পড়ায় মনোযোগ বাড়তে পারে।

১৩. ছাড় দেওয়া

কোন কোন সময় বাচ্চারা বিভিন্ন কারনে পড়তে চায়না সেই সময় তাকে ছাড় দেন। অথবা কোন ভুল করলে তাকে না বকে ছাড় দেওয়ার অভ্যাস করুন এবং বার বার শিখিয়ে দিন তাহলে সে ভাল করবে।

১৪. সময় ভাগ করে দেওয়া

আপনি আপনার সন্তানকে বিভিন্ন সময় ভাগ করে দিন। যেমন পড়ার সময় বিভিন্ন বিষয়গুলোকে সময়ে ভাগ করে দিন। তাহলে দেখবেন সে পড়ার প্রতি আকৃষ্ট হবে।

১৫. অগ্রগতি খেয়াল রাখুন

আপনি আপনার বাচ্চার অগ্রগতির দিকে প্রতিনিয়ত খেয়াল রাখুন। সে কেমন আগাচ্ছে, তার কোন কোন দিন পিছিয়ে আছে। কোন কোন দিকে আরো ভাল করা যায়। এই সকল বিষয়গুলোকে লক্ষ্যদিন।

১৬. সহজ বিষয় দিয়ে শুরু করা

আপনি যদি আপনার সন্তানকে প্রথমে কোন কঠিন বিষয় নিয়ে পড়া শুরু করতে বলেন তাহলে তার পড়ার প্রতি আগ্রহ কমে আসবে এবং বড়তে মোন বসবেনা। তাই প্রথমে সহজ বিষয়গুলো দিয়ে শুরু করতে বলেন তাহলে সেই বিষয় খুব তাড়াতাড়ি আয়ত্বে আসবে এবং পরবর্তী বিষয়ে সহজে আকৃষ্ট হবে।

১৭. খেলার সময় দেওয়া

সব সময় বাচ্চাকে পড়ার মধ্যে রাখবেন না। তাকে ধেলাধুলা করার সময় দিন। সে খেলাধুলা করলে তার মন ভাল থাকবে এবং পড়ায় মনোযোগী হবে।

১৮. পড়া শেষে বাচ্চাকে পছন্দের খাবার দেওয়া

আপনি যদি প্রদিতিন আপনার বাচ্চার লেখাপড়া শেষে তার পছন্দের খাবার পরিবেশন করেন তাহলে আপনার বাচ্চা খুব সহজেই পছন্দের খাবারের লোভে পড়ালেখায় মনোযোগী হবে।

১৯. বাচ্চাকে নিয়মিত স্কুলে যেতে দেওয়া

আপনি আপনার বাচ্চাকে প্রতিদিন স্কুলে যেতে দিন। সে প্রতিদিন স্কুলে গেলে স্কুলের পড়ার প্রতি তার আগ্রহ বাড়বে। তাই বাচ্চাকে প্রতিদিন স্কুলে যেতে দেওয়া জরুরী।

২০. বাচ্চাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া

বাচ্চারা প্রতিদিন এক জায়গায় থেকে বোরিং হতে পারে। তাই সপ্তাহে ছুটির দিনে অথবা মাসে একবার করে হলেও বাচ্চাকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাওয়া জরুরী। তাহলে বাচ্চাদের মন ভাল হয়ে এবং পড়ালেখায় মনোযোগী হয়।

২১. বাচ্চাকে মোবাইল ফোন থেকে দুরে রাখা

আপনি আপনার বাচ্চাকে কোন অবস্থাতেই মোবাইল ফোন দিবেননা। কারন একবার মোবাইলে বাচ্চারা আসক্ত হলে তাকে ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন। এছাড়াও মোবাইল ফোনের আলো বাচ্চাদের চোখের ক্ষতি করে খুব সহজে।

উপসংহার

প্রতিটি সন্তান তার পিতা-মাতার খুব আদরের হয়ে থাকে। আর এই সন্তানকে ঘিরে প্রতিটি পিতা মাতার অনেক স্বপ্ন জড়িয়ে থাকে। তাই সঠিক গাইডলাইন ফলো করে আপনি আপনার সন্তানকে ছোট থেকেই সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে থাকুন। তাহলেই সে একজন আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষত হয়ে উঠতে পারবে।

শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক আশা করি উপরে উল্লেখিত সথ্যের ভিত্তিতে আপনি উপকৃত হবেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদে পেজ ফলো রাখতে পারেন। আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে আপনার শুভাকাঙ্খিকে এই পোস্টটি শেয়ার করুন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url