বাংলাদেশের ধনী জেলার তালিকা
প্রিয় পাঠক আশা করি ভালো আছেন। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে পরিচিত। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে আজ আমি আপনাদের মধ্যে বাংলাদেশের ধনী জেলার তালিকা তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে একটু একটু করে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলতে। বর্তমানে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে সুপরিচিতি লাভ করেছে। যা আমাদের সকলের জন্য একটি গর্ভের বিষয়। বাংলাদেশের আয়তন ১৮৭৫৭০ বর্গ কিলোমিটার যা ৬৪টি জেলার অবস্থিত।
ভূমিকা
বাংলাদেশ দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার একটি স্বাধীন দেশ। ১৯৭১ সালে এই দেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনের পর এই দেশ ছিল একটি গরিব রাষ্ট। যুগের পরিবর্তনে ধীরে ধীরে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং সময় পার করে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে গর্ভের সাথে উন্নয়নশীল দেশের পদমর্যদা লাভ করেছে।আরো পড়ুন: ঘরে বসে আয় করার উপায়
বাংলাদেশের ধনী জেলার তালিকা
এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশের প্রথম সারীর ১০টি জেলা সম্পর্কে।# ১০ খুলনা জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ১০ নম্বরে অবস্থান করছে খুলনা জেলা। খুলনা জেলা বাংলাদেশের মধ্যে আয়তনের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে। এ জেলার দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর রয়েছে। এছাড়াও সুন্দবন এই জেলায় অবস্থান। এ জেলার মোট আয়তন ৪৩৯৪.৪৫ বর্গকিলোমিটার এবং মোট জনসংখ্যা ৩৫ লক্ষ ৪৫ হাজার এর মত। এ জেলার স্বাক্ষরাত হার ৫৭.৮১%। শিক্ষার দিক থেকে বাংলাদেশের মধ্যে যে সকল জেলা রয়েছে তার মধ্যে খুলনা জেলা অন্যতম। এ জেলার আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে কৃষি যা ৩৪.৯০%, ব্যবসা ১৯.৬০%, চাকরি ১৮.২৭% আর বাকি অন্যান্য পেশা থেকে হয়ে থাকে। পর্যটন নগরী হিসাবেও খুলনার ব্যপক সুনাম রয়েছে। এখানে সুন্দরবন, নদী, রুপসা সেতুন, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।# ০৯ নারায়নগঞ্জ জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ০৯ স্থানে রয়েছে নারায়নগঞ্জ জেলা। এ জেলা ঢাকা বিভাগের সবথেকে ছোট একটি জেলা। এর মোট আয়তন ৬৮৩.১৪ বর্গ কিলোমিটার। এ জেলা সোনালী আঁশ পাটের জন্য বিখ্যাত। রপ্তানি শিল্পে পাট যখন এদেশের প্রধানতম তখন নারায়নগঞ্জ “প্রাচ্যের ডান্ডি” নামে পরিচিত থাকলে কালের বিবর্তনে বর্তমানে নারায়নগঞ্জ গার্মেন্টস ও হোসিয়ারী শিল্পের জন্য সুপরিচিত। নারায়নগঞ্জ জেলার শিক্ষার হার ৫৭.১০% এবং মোট জনসংখ্যা হলো ৩০৭৪০৭৭ জন (২০১১ এর আদমশুমারী অনুযায়ী)। এদেশের শতবছর পুরোনা নদী বন্দর এ জেলাতে অবস্থিত। এছাড়ার দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারী সারের বাজার এ জেলাতে অবস্থিত।# ০৮ গাজীপুর জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ০৮ স্থানে রয়েছে গাজীপুর জেলা। এ জেলা ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক জেলা শহর। এর মোট আয়তন ১৭৭০.৫৮ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৪৪০৩৯১২ জন। এ জেলাতে দেশের সর্বমোট শিল্পকারখানার বেশিভার এ জেলাতে অবস্থিত। এছাড়াও এ জেলায় বিশ্ব ইস্তেমা, টাকশাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি র্পাক, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, তৈরি পোশাক কারখানা, জাতীয় কারাগার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর সদর দপ্তর সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো অবস্থিত।আরো পড়ুন: বিজ্ঞাপন দেখে আয় করুন ৭০০-১০০০ টাকা
# ০৭ মানিকগঞ্জ জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ০৭ স্থানে রয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা। এ জেলা ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক জেলা। এ জেলার সনসংখ্যা ১৬৭১৯৮৫ এবং এর মোট আয়তন হলো ১৩৭৮.৯৯ বর্গ কিলোমিটার। এটি একটি জেলা শহর হলেও বাংলাদেশের ধনী জেলার মধ্যে ৭ম স্থান অধিকার করে নিয়েছে। বিভিন্ন শিল্প, কলকারখানা, ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান এ জেলাকে ধনী জেলা করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। এ জেলার শিক্ষার হার ৬৮%। তবে মানিকগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের একটি পাশ্ববতী বৃহত্তম জেলা শহর হলেও শিক্ষার দিক থেকে তেমন আগাতে পারেননি এ জেলা শহর।# ০৬ হবিগঞ্জ জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ০৬ স্থানে রয়েছে হবিগঞ্জ জেলা। এটি সিলেট বিভাগের একটি প্রশাসনিক জেলা। এর মোট আয়তন ২৬৩৬.৫৮ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৮৩০৫৫৮ জন। স্বাক্ষরতার হার ৬৯.৩২%। এ জেলাতে শিল্প কারখান, বিভিন্ন টেক্সটাইল মিল, সিরামিক কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, সাবান কারখানা, শুকনো মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র অবস্থিত। এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৪২.২৬% কৃষির সাথে জড়িত। এ জেলার শিক্ষার হার ৭০%। এ জেলা খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ একটি জেলা। এখানে প্রাকৃতিক গ্যাস, সিলিকা বালি, খনিজ বালি রয়েছে। এছাড়াও রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্র, বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র ও হবিগঞ্জ গ্যাস ক্ষে অবস্থিত। বানিজ্যের দিক থেকেও এ জেলা অনেক এগিয়ে। এ জেলার রপ্তানিযোগ্য পন্য হলো ধান, মাছ, চিংড়ি, ব্যাঙ এর পা, শুকনো মাছ, চা, পান পাতা, গুড় রাবার, বাঁশ, গ্যাস, তেল ও টেক্সটাইল পণ্য।# ০৫ কুমিল্লা জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ০৫ স্থানে রয়েছে কুমিল্লা জেলা। রাজধানী ঢাকা জেলা থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত কুমিল্লা জেলা এবং এটি চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এ জেলার মোট আয়তন ৩০৮৭.৩৩ বর্গকিলোমিটার। এ জেলার মোট জনসংখ্যা ৫৬০২৬২৫ জন এবং এ জেলার স্বাক্ষরতার হার ৮১.৫১%। এ জেলার অর্থনীতি মুলত কৃষির উপর নির্ভরশীল। এ অঞ্চলের মানুষের দারিদ্রের হার ২০.৬%। এছাড়াও এখানকার মানুষ বিভিন্ন চাকুরী ও অন্যান্য পেশার সাথে জড়িত রয়েছে।# ০৪ চট্টগ্রাম জেলা
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও বাণিজ্যিক নগরি হলো চট্টগ্রাম। এই শহরটি বাংলাদেশের পূর্বাঞ্জলে অবস্থিত। এ শহরটিকে পাহার, সাগর এবং উপত্যকায় ঘেরা এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নগরী হলো চট্টগ্রাম। এর মোট আয়তন ৫২৮২.৯২ বর্গ কিলোমিটার ও মোট জনগন ২০২২ এর তথ্যমতে ১১১৭৫২৬ জন। সারাদেশের অর্থনীতির ১২ ভাগ অবদান রাখে চট্টগ্রাম। এছাড়াও দেশের শিল্প উৎপাদনের ৪০%, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৮০% এবং সরকারি রাজস্বের ৫০% অবদান রাখে চট্টগ্রাম। দক্ষিন এশিয়ার তৃতীয় বন্দর হিসেবে বার্ষিক ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য পরিচালনা করে এই জেলা।# ০৩ সিলেট জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ০৩ স্থানে রয়েছে সিলেট জেলা। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এ জেলার মোট আয়তন ৩৪৫২ বর্গ কিঃমি এবং জনসংখ্যা ৩৮৫৭০৩৭ জন ২০২২ এর গননা অনুযায়ী। বাংলাদেশের প্রকৃতিক সৌন্দয্যে ঘেরা এই শহরটি। সিলেট মুলত পাহাড়, চা বাগান ও ঝর্নার জন্য বিখ্যাত একটি নাম। সিলেটের নাম শুনলেই মনের মধ্যে প্রকৃতির সৌন্দর কথা ফুটে উঠে সর্বপ্রথম। এছাড়াও এ অঞ্চলের অধিকাং মানুষ বিদেশে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে জড়িত। দেশের মুলত সিংহভাগ রেমিটেন্স আসে এ অঞ্চলের মানুষের মাধ্যমে। এ অঞ্চলের গড় শিক্ষার হার ৫১.২%। মুলত এখানে মানুষ বিদেশের কাজের প্রতি বেশি আকৃষ্ট।# ০২ নৌয়াখালি জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ০২ স্থানে রয়েছে নৌয়াখালি জেলা। এ জেলার মোট আয়তন ৪২০২.৭০ বর্গ কিমিঃ এবং মোট জনসংখ্যা ৩৬২৫২৫২ জন ২০২২ এর গননা অনুযায়ী। এ এলাকার শিক্ষার হার ৭৫.৩৬% । এ জেলার মানুষ নৌকা ও জাহান শিল্পে জড়িত। এছাড়াও মাছ ধরা, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও পরিবহন, শুটকি উৎপাদন, জাল মেরামত পেশায় দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ জড়িত। এ জেলার অনেকে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসাবে সুনাম অর্জন করেছে। এ অঞ্চলের মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বড় বড় শিল্প কারখানা গড়ে তুলেছে। নোয়াখালী জেলার মানুষ দেশের বড়বড় শহর এবং বিদেশে কাজের জন্য গমন করে থাকে। সব থেকে এ অঞ্চলের মানুষ মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ সহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে থাকে।# ০১ ঢাকা জেলা
বাংলাদেশের ১০টি ধনী জেলার মধ্যে ঢাকা ০১ স্থানে রয়েছে। ঢাকা জেলার আয়থন ১৪৬৩.৬০ বর্গ কিলোমিটার এবং এর জনসংখ্যা রয়েছে ২০৫১৭৩৬১ জন যা ২০২১ এর গননা অনুযায়ী। এ জেলার মোট শিক্ষার হার ৯৫%। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। দেশের সবথেকে বড়বড় শপিং কমপ্লেক, শিল্পকারখানা, কারখানার অফিস, গার্মেন্টস শিল্প সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় ঢাকাতে অবস্থিত। এজন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষেরা কর্মের জন্য ঢাকাকে বেছে নিয়েছে।উপসংহার
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হলেও দিন দিন এর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। দেশের আয়ের উল্লেখযোগ্য পরিমান অর্থ আসে রেমিটেন্সের মাধ্যমে যা আগামীতে এ দেশকে উন্নয়নের দিকে আরো বেশি ধাবিত করবে।শেষ কথাঃ আয় রোজগারের ধারা প্রতিনিয়ম পরিবর্তন হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র মারফত তথ্যদি সংগ্রহ করা হয়েছে। এর কিছু পরিবর্তন হতেও পারে সময়ের বিবর্তনে। আশাকরি পোস্টটি আপনার উপকারে আসবে। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url