মিষ্টি কুমড়া বীজ খাওয়ার উপকারিতা-কুমড়া বীজ খাওয়ার সঠিক নিয়ম

আমাদের খাদ্য খালিকায় যে সকল সবজি রয়েছে তার মধ্যে রঙিন সবজি হিসাবে সকলের মন কাড়ে মিষ্টি কুমড়া। এটি খেতে যেন সুস্বাদু তেমনি অনেকের কাছে এটি একটি প্রিয় সবজি। আমরা অনেকেই হয়তো মিষ্টি কুমড়া খেতে ভালবাসি কিন্তু আমাদের কি জানা আছে এর বীজের পুষ্টিগুন সম্পর্কে। যদি জানা না থাকে তাহলে গুরুত্ব সহকারে এই পোস্টটি পড়ুন হতে পারে এটি আপনার জন্য খুব উপকারী একটি পোস্ট।
 

মিষ্টি কুমড়া বীজ খাওয়ার উপকারিতা

আমরা মিষ্টি কুমড়া অনেকে খেয়ে থাকলেও এর বীজ সম্পর্কে তেমন কোন ধারনা না থাকার কারনে ফেলে দিয়ে থাকি। কিন্তু এ ছোট ছোট বীজের মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারী উপাদান। যা আমাদের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আমাদের সুস্থ্যভাবে বেচে থাকতে অনেক সহায়তা করবে।

ভূমিকা

মিষ্টি কুমড়া খুব কমন একটি সবজি। এই সবজি খেতে মিষ্টি প্রকৃতির এবং বিভিন্ন রেসিপি হিসাবেও খাওয়া হয়ে থাকে। মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে থাকে ছোট ছোট হালকা হলুদ বর্ণের বীজ। এই বীজ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে পরিপূর্ণ। এই বীজ বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যেতে পারে। মিষ্টি কুমড়ার বীজ উদ্বিজ্জ প্রোটিনের গুলোর মধ্যে একটি ভাল উৎস। এর মধ্যে কোনো কোলেস্টেরল নেই বলে এটি নিরাপদ প্রোটিনের উৎস।

আরো পড়ুন: লটকন খাওয়ার উপকারিতা

মিষ্টি কুমড়ার বীজের পুষ্টি উপাদান

মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস কপার, ভিটামিন-ই, আয়রন ও ফাইবার। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়া বীজে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যালস উপাদান যা মানুষের শরীরকে সুস্থ্য থাকতে সাহায্য করে।

মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা

এই ছোট ছোট বীজগুলোর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে নানান গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আসুন এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রক

এই মিষ্টি কুমড়া বীজ জায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করতে খুব ভাল কাজ করে। মিষ্টি কুমড়া বীজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তের শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা এটি গ্রহণ করলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকে।

আরো পড়ুন: সহজে মোটা হওয়ার উপায়

ওজন কমাতে

মিষ্টি কুমড়ার বীজ ওজন কমাতে ভাল কাজ করে। যারা ওজন কমাতে চান তারা মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। কারন মিষ্টি কুমড়ার বীজে প্রোটিন ও ফাইবার থাকায় দ্রুত ক্ষুদা নিবারন করার পাশাপাশি খাওয়ার প্রবৃত্তি কমায়।

হাড় মজবুত করতে

মিষ্টি কুমড়ার বীজ ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম এর খুব ভাল উৎস। ফলে এটি হাড় মজবুত রাখতে খুব ভাল কাজ করে।

হার্ট ভাল রাখতে

এই বীজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডও কমায় যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায় অনেকআংশে।

চুলপড়া রোধ করতে

মিষ্টি কুমড়া বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, সালফার, জিংক, ভিটামিন এ, বি এবং কে যা চুল পড়া দুর করে চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে ও চুলের উজ্জলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ভাল ঘুমাতে

মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে সেরাটোনিন নামের রাসায়নিক উপাদান যা আমাদের স্নায়তন্ত্রের চাপ কমিয়ে অনিদ্রার সমস্যাকাটাতে সাহায্য করে।

গর্ভকালীন উপকারিতা

গর্ভকালীন অবস্থায় কেও যদি মিষ্টিকুমড়া বীজ খেতে পারে তাহলে এ বীজে থাকা উপাদান মা ও ভ্রুণের উপকারে আসে। এই বীজে থাকা বেটা ক্যারোটিন যা ভ্রুনের হার্ট, হাড়, চোখ, কিডনি, ফুসফুস, নার্ভ উন্নত করতে সাহায্য করে

পুরুষের স্পার্ম উন্নত করে

মিষ্টি কুমড়ার বীজ জিংক সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি পুরুষের অনুর্বরতার ঝূঁকি কমাতে সহায়তা করে। জিংকের স্বল্পতার কারনেই স্পার্মের কোয়ালিটি ক্ষুন্ন হয় যার ফলে বেড়ে যায় অনুর্বরতার আশঙ্কা। এই বীজ টেসটোসটেরনের মাত্রা বাড়ায় যার ফলে যার ফলে স্পার্মের কোয়ালিটি বৃদ্ধি পায়।

ত্বকের যত্নে

মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার ফলে ত্বকের কোলাজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায় ও ত্বক সুন্দর দেখায়। এমতাবস্থায় আপনি ত্বকের যন্ত নেওয়ার জন্য মিষ্টি কুমড়া বীজ খেতে পারেন।

কুমড়া বীজ খাওয়ার সঠিক নিয়ম

কুমড়া বীজ বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যেতে পারে। তবে কেউ যদি সকালে নাস্তার সঙ্গে এই খাবারটি যোগ করতে পারে তাহলে খুব ভাল হয়। এছাড়াও বিকালে ভাজাপোড়া বা অন্যান্য খাবার পরিহার করে এই খাবার যোগ করতে পারেন। এই বীজ প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ টি বীজ খেতে পারেন। এই বীজ বিভিন্ন খাবারের সাথে যোগ করেও খেতে পারেন। রান্না সাথে যোগ করে খেতেও পারেন।

এই বীজ আপনি চাইলে ভাল করে রোদে শুকিয়ে রংরক্ষন করে রাখতে পারেন। এছাড়াও হালকা আচে অল্প তেল দিয়ে ভেজেও খাওয়া যেতে পারে।

এই বীজ খাওয়ার শর্তকতা

মিষ্টি কুমড়া বীজ বেশি পরিমানে খেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেউ যদি অধিক মাত্রায় এই বীজ খেতে থাকে তাহলে শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে সাথে পেট ফোলা বা পেট ফাপা, পেট ব্যথা, ওজন কমার পরিবর্তে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি অর্থাৎ যাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম তাদের এটি বেশি পরিমান খেতে পারবেনা।

উপসংহার

মিষ্টিকুমড়া বীজ দেখতে অনেক ছোট ছোট মনে হলেও এর পুষ্টি উপাদান আমাদের শারীরিক সুস্থ্যতা বজায় রাখতে খুব ভাল কাজ করে থাকে। তাই আমাদের উচিত এ বীজ ফেলে না দিয়ে এ বীজের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে।

শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক আশা করি এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনি কুমড়া বীজের বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এমন আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েব সাইড ঘুরে আসতে পারেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url