কিভাবে লবঙ্গ খেলে এর উপকারিতা পাওয়া যায়
লবঙ্গ খুব সাধারণ ও সর্ব পরিচিত এক ধরনের মসলা। লবঙ্গ সাধারণত মসলার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর স্বাদ ও ঘ্রাণ খাবারের স্বাদকে বাড়িয়ে তুলে কয়েকগুন। এছাড়াও লবঙ্গ আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকারে কাজ করে থাকে। কেউ যদি লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সঠিক ভাবে করে থাকে তাহলে সে নানা রোগ থেকে মুক্তি পাবে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।
লবঙ্গ সাধারণত লবঙ্গ গাছের ফুলের কুড়িকে শুকিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। লবঙ্গে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন সহ নানা উপকারি উপাদান আমাদের সুস্থ্য থাকা সহ শারীরিক ও মানোষিক রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আরো পড়ুন: ডিপ্রেশান কেন হয়, ডিপ্রেশন দুর করার উপায়
ভূমিকা
লবঙ্গ এর বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিওমোরোমেটাম। লবঙ্গ শুধু রান্না কাজে ব্যবহার করা হয় এমন নয়। এটি আমাদের বিভিন্ন রোগ নিরাময় সহ সুস্থ হয়ে বেচে থাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লবঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন উপাদান ও ভিটামিন যা আমাদের সুস্থতা, মানোষিক বিকাশ, মস্তিষ্কে স্বস্থি সহ নানান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে লবঙ্গ।আরো পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়
লবঙ্গে থাকা বিভিন্ন উপাদান সমূহ
লবঙ্গ খাবারের সুগন্ধ বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাদকে বাড়িয়ে তুলে। আর এতে থাকা ইউজেনল নামক এক ধরনের যৌগ এর উপস্থিত থাকার কারনে। এছাড়াও লবঙ্গে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-৬, ১২, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে। যা আমাদের শরীরের সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।আরো পড়ুন: কাঁচা পেঁপেঁ খাওয়ার উপকারিতা
এছাড়াও লবঙ্গে থাকা তেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অ্যাসিটাইল ইউজেনল, বেটা- ক্যারোফাইলিন, ভ্যানিলিন, ক্র্যাটেগলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালোট্যানিক অ্যসিড, মিথাইল স্যালিসাইলেট, ফ্লাভানয়েড, ইউজেনিন, িইউজেনটিন, ট্রি-টেরপেনয়েড, ক্লিনোসিব অ্যাসিড, স্টিগ্মারেস্টরল, সেক্সুইটার্পিন।
লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লিভার ভাল রাখতে লবঙ্গ
লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে থাকা টক্সিক উপাদানগুলো বের করেদিতে সাহায্য করে। যার ফলে লিভারের পাশাপাশি একজন মানুষের শরীরির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে কর্মক্ষমতা বাড়ায়ে তুলে লবঙ্গ।বিভিন্ন সংক্রমন থেকে রক্ষা করে লবঙ্গ
এক গবেষনায় প্রমানিত যে, লবঙ্গে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ মানুষের শরীরের যে কোন ধরনের জীবানুকে মেরে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এমতাবস্থায় আমাদের লবঙ্গ খাওয়া উচিত।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে লবঙ্গের জুড়ি মেরা ভার। কোন ব্যক্তি যদি লবঙ্গ চিবিয়ে বা চুষে চুষে খেতে পারে তাহলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় কয়েকগুন।হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
কোন ব্যক্তি যদি খাবারের আগে লবঙ্গ দিয়ে এক কাপ গরম চা খেতে পারে তাহলে তার হজম সক্রান্ত অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যার প্রভাবে তার হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বদ হজম হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।রক্ত পরিশোধন করে লবঙ্গ
কোন ব্যক্তি যদি লবঙ্গ খেতে পারে তাহলে তার রক্তকে পরিশোধন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে লবঙ্গ। লবঙ্গের তেলের মধ্যে জিবাণুনাশক গুন বিদ্যমান থাকায় এটি শরীরের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।বাথ ব্যথা দুর করে লবঙ্গ
কারো যদি বাথ ব্যথাযনিত সমস্যা থাকে তাহলে লবঙ্গ থেকে পারেন। এছাড়াও যে স্থানে এ ধরনের ব্যথা রয়েছে যেখানে লবঙ্গের তেল মালিশ করুন উপকার পাবেন।মাথা ব্যথা দুর করে লবঙ্গ
মাথা ব্যথা জনিত কোন সমস্যা থাকলে গরম এক গ্লাস দুধের সাথে লবঙ্গের গুঁড়া মিশিয়ে এবং সামান্য পরিমান লবণ মিশিয়ে নিয়ে পান করে তাহলে মাথা ব্যথা দ্রুত কমে যাবে। এছাড়াও লবঙ্গ ব্রেস্ট ক্যান্সার, ওভারিয়ান ক্যানসার প্রতিরোধেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে লবঙ্গ
কারো যদি উচ্চ ডায়বেটিস থাকে তাহলে তার জন্য লবঙ্গ অনেক উপকারি একটি উপাদান। এটি শরীরে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রেখে শরীরের রক্ত কোষের মধ্যে বাড়তি চিনি পরিবন করতে সাহায্য করে। যার ফলে একজন ডায়বেটিস রোগী নিয়মিত লবঙ্গ খেতে পারেন।
দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দুর করে লবঙ্গ
কারো দাতে অস্বস্তি বা মাড়ি ফোলা জনিত সমস্যা থাকলে লবঙ্গ চিবিয়ে বা কয়েকটি লবঙ্গ দিয়ে চা খেয়ে নিতে পারেন। লবঙ্গ রয়েছে অ্যন্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা শরীরে যাওয়ার পর কিছু বিক্রিয়া শুরু করে। এর ফলে নিমিষে দাঁতের ও মাড়ির যন্ত্রনা কমে যায়।কফ ও কাশি দুর করে লবঙ্গ
কারো বুকে কফ জমে থাকলে বা কাশি বেশিদিন স্থায়ী হয়ে থাকলে সে লবঙ্গ দিয়ে চা খেতে পারেন এর সঙ্গে তুলশিপাতা, পুদিনাপাতার কম্বিনেশান থাকলে অনেক ভাল হয়।লবঙ্গ খাওয়ার সঠিক নিয়ম
লবঙ্গ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে। লবঙ্গ গুড়া দুধের সাথে মিশিয়ে তাতে লবন দিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও কয়েকটি লবঙ্গ দিয়ে চা খাওয়া যেতে পারে। অনেককেই আবার দেখা যায় লবঙ্গ আস্ত চিবিয়ে ও চুষে খেয়ে থাকেন। তবে অনেকের ক্ষেত্রে লবঙ্গ এটি খুব কষ্টের হয়েও থাকতে পারে। কারন লবঙ্গ খুব তিক্ষ ও ঝাঝ জাতীয় একটি মসলা। লবঙ্গ চা বদ হজম ও হজমের সমস্যা থাকলে খাবারের আগে খেতে পারেন। যা খুব কার্যকরী।উপসংহার
লবঙ্গ একটি মসলা জাতীয় খাবার। এটি মসলার পাশাপাশি আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যকরী ভূমিকা পালন করেত সাহায্য করে। কেউ যদি লবঙ্গ খেতে পারেন তাহলে তার শারীরিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই আমাদের সুস্থ থাকতে লবঙ্গ খাওয়া উচিত।শেষ কথাঃ লবঙ্গ খুব গুরুত্বপূর্ণ মসলাজাতীয় উপাদান। এটি মসলার পাশাপাশি খালি মুখে বা বিভিন্ন উপাদানের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। প্রিয় পাঠক এই পোস্টথেকে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে অন্যকেউ পড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে আপনার সুভাকাঙ্খিকে শেয়ার করুন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট পেতে আমাদের পেজকে ফলো করে রাখতে পারেন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url