শাওয়াল মাসে ৬ রোজা রাখার ফজিলত - কাজা রোজা আগে না শাওয়াল এর রোজা আগে

প্রিয় পাঠক আজ আমি আপনাদের মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা মুসলিম আর মুসলিম হিসাবে আমাদেরকে মহান আল্লাহ তায়ালা কিছু আমল দিয়েছেন যেগুলোর মাধ্য খুব অল্প আমলের দ্বারা অনেক পরিমান সওয়াব পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি হলো সাওয়াল মাসে ৬ রোজা রাখার ফজিলত। হাদিসে বর্নিত আছে কেউ যদি সাওয়াল মাসে ৬ টি রোজা রাখে তাহলে সে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।
 
শাওয়াল মাসে ৬ রোজা রাখার ফজিলত
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা মনে করে কাজা রোজা আগে না শাওয়াল এর রোজা আগে করবে সে বিষয়ে দিধাবোধের মধ্যে রয়েছে। আর এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

ভূমিকা

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স) রমজান মাসে রোজা রাখার পরে শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখতেন এবং এ ব্যপারে তার উম্মাতদেরও রাখার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখবে সে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।

শাওয়ার মাসে ৬ রোজা রাখার ফজিলত

অনেক আলেম ওলামাগণ এই বিষয়টি এভাবে প্রকাশ করেছে যে রমজান মাসে ৩০ টি রোজা ও শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা যা সর্বমোট ৩৬ টি রোজা হয় আর হাদিসে বর্নিত আছে অন্যান্য মাসের থেকে রমজান মাসের সওয়াব ১০ থেকে ৭০০ গুন পর্যন্ত হয়ে থাকে সেখাসে যদি সর্বনিম্ন ১০ এর সাথে সেই রোজা সংখ্যা ৩৬ গুন করা হয় তাহলে হয় ৩৬০টি যা এক বছরের সমান। যাতে বোঝা যায় কেউ যদি শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখে তাহলে সে পুরো ১ বছর রোজা রাখার সওয়াব তার আমলনামায় নিখা হয়।

কাজা রোজা আগে না শাওয়াল এর রোজা আগে রাখবেন

আমাদের মধ্যে বিশেষ করে মা-বোনদের ক্ষেত্রে দেখা যায় রমজান মাসে তাদের কিছু রোজা কাজা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে সে আগে সেই কাজা রোজা রাখবে নাকি শাওয়ালের রোজা রাখবেন এই নিয়ে বিরম্বনায় পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে বলা যায় যার কাজা রোজা আছে তাকে প্রথমে কাজা রোজাগুলো করতে হবে এরপর শাওয়ালের রোজাগুলো রাখতে পারবেন।

এই জন্য কাজা রোজাগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে যে রমজানের রোজা হল ফরজ। আর সেই জন্য ফরজ রোজার প্রাধান্য বেশি তাই আগে ফরজরোজাগুলো সম্পূর্ণ করে কাজা রোজা রাখতে হবে।

কখন শাওয়ালের রোজা রাখা যাবে

কেউ চাইলে ঈদের দিনের পর থেকে রোজা রাখতে পারবে। এই রোজা ঈদের দিন ব্যতীত পুরো শাওয়াল মাস এর মধ্যে করতে পারে। ঈদের দিন রোজা রাখতে পারবেনা এই জন্য যে ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। কারন মুসলিম ধর্মে দুইটি দিন অর্থাৎ দুই ঈদ হলো আনন্দের দিন।

শাওয়ালের ৬ রোজা রাখা জরুরী হওয়ার কারন

যোহরের নামাজে আগে সুন্নত নামাজ এর পর ফরজ নামাজ তার পর আবার সুন্নত নামাজ রয়েছে। এর করন হলো ফরজ নামাজে কোন সমস্যা হলে সেই সুন্নত নামাজ দ্বারা তা পরিপূর্ণ করা হয়। তেমনি কেউ যদি শাওয়ালের ৬ টি রোজা রাখে তাহলে তার ফরজ রোজার মধ্যে কোন খামতি থাকলে তা পূর্ণ হয়ে যায়।

শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়ম

এই রোজা এক সঙ্গে ৬টি না করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে করতে পারে। তবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে করা উত্তম। যেমন ১ টি বা ২টি রোজা রেখে মাজে গ্যাপ দিয়ে আবার রোজা রাখতে হবে। আর এভাবে পুরো মাসের মধ্যে এই রোজা রাখতে পারে।

শাওয়ালের ঈদের সুন্নত সমূহ

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হবে। এরপর মেসওয়াক করে গোসল করতে হবে। সাধ্যমত উত্তম পোশাক পরিধান করতে হবে। ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় খেজুর অথবা কিছু মিষ্টি যাতীয় খাবার খেতে হবে। এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া এবং অপর রাস্তা দিয়ে বাড়িতে আসতে হবে। একে অন্যের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হবে। তাকবিরে তাহরিমা বলতে হবে।

ঈদের দিনের আনন্দ

ঈদের দিনে আনন্দ করা উত্তম। কারন মুসলিম ধর্মে ঈদের দিন হলো খুশি দিন আর এ খুশিদের দিনে আনন্দ করা, খেলাধুলা করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (স) এর জামানায় এই দিনে খেলাধুলা হতো বলে হাদিসে বর্নিত রয়েছে। এই দিনে বাচ্চারা অনেক আনন্দ করলেও যারা বড় বা যুবক ও প্রাপ্ত বয়স্ক তাদের ক্ষেত্রে হাদিসে যে বিধিনিশেষ রয়েছে তা বহাল থাকবে।

উপসংহার

পূর্বকার নবী রাসুল ও তাদের উম্মতগন অনেক বছর বয়স পেলেও সেক্ষেত্রে আমরা শেষ নবীর উম্মত হিসাবে আমাদের বয়স কম হলেও এমন কিছু আমল রয়েছে যেগুলো আমরা যদি পালন করতে পারি তাহলে সওয়াবের দিক থেকে আমরা তাদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকবো। সেই জন্য অনেক নবী রাসুল শেষ নবীর উম্মত হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলো বলে হাদিসে বর্নিত আছে।

লেখকের মন্তব্য: আমরা যদি রমজান মাসের ৩০ টি বা ২৯ টি রোজা রাখতে পারি তাহলে শাওয়াল মাসের ৬ টি রোজা রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব। যা থেকে আমরা সারা বছরের সওয়ার পাওয়ার মত ফজিলত পেতে পারি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url