কাঁচা ছোলার উপকারিতা ও গুনাগুন
প্রিয় পাঠক আশা করি ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো আর তা হলো ছোলা। কাঁচা ছোলা আমাদের জন্য যে কতটা উপকারি তা যদি আপনি যানতে চান তাহলে খুব গুরুত্বসকারে এই পোস্টটি পড়ুন। তাহলে চলুন কাঁচা ছোলা উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে জানা যাক।
ছোলা মুলত খুব সহজলভ্য একটি উপাদান। এটি সারা বছর বাজারের মুদি দোকানে পাওয়া যায়। দামে সস্তা হলেও এর উপকারিতা রয়েছে অনেক। তাই আপনি যদি কাঁচা ছোলা না খেয়ে থাকেন তাহলে আজ থেকেই কাঁচা ছোলা খেতে পারেন।
ভূমিকা
ছোলা আমরা বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকি। এটি মুলত ডাল জাতীয় একটি খাবার। তার পরেও আমরা একে বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকি। কেউ রান্না করে, কেউ রান্না করা তরকারির সাথে মিশিয়ে আবার অনেকে কাঁচা অবস্থায় খেতে ভালবাসি। তবে সব থেকে ভাল ফল পাওয়া যায় শুনকা ছোলা রাতে পানিতে ভিজেয়ে সকালে কাঁচা অবস্থায় খালি পেটে খেলে।আরো পড়ুন: গাজর খাওয়ার উপকারিতা
ছোলাতে কি কি উপাদান রয়েছে
কাঁচা ছোলাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন-বি১, ভিটামিন-বি২ সহ আরো অনেক উপাদান।কাঁচা ছোলার উপকারিতা
কাঁচা ছোলা একটি পারফেক্ট ভিটামিনে পরিপূর্ণ একটি খাবার। যা আমাদের শরীরকে সুঠাম ও মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে দূর্বল হওয়া থেকে রক্ষা করে ও শরীরকে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখে। এখন আসুন ছোলা উপকারিতা সমূহ জানা যাকডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
কাঁচা ছোলা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে খুব ভাল কাজ করে। ছোলাকে কমপ্লেক্স কার্বো বলা হয়। যা ব্লাইসেমিক ইনডেক্স কমিয়ে থাকে সেই জন্য রক্তে মর্করা কম বৃদ্ধি পায়। যা আমাদের শরীরকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে। কারো যদি ডায়াবেটি থেকে থাকে তাহলে সে আজ থেকেই কাঁচা ছোলা খাওয়া শুরু করে দিতে পারে।উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন
কাঁচা ছোলা ব্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় রক্তে শর্করা অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়না। এতে করে রক্তে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে ছোলা।হৃদরোগ কমাতে কাঁচা ছোলা
কাঁচা ছোলা হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে খুব ভাল কাজ করে। কেউ যদি হৃদরোগে ভূগে তাহলে সে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কাঁচাছোলা খেতে পারে। কাঁচা ছোলাতে থাকা বিভিন্ন উপাদান আপনাকে হৃদরোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে।যৌন দূর্বলতা দূর করে ছোলা
ছোলা একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা ছোলার মধ্যে ৩৮০ক্যারলি শক্তি পাওয়া যায়। যাই কেউ যদি যৌন দূর্বলতায় ভুগে তাহলে সে প্রতি দিন সকালে খালে পেটে কাঁচা ছোলা খেতে পারে।আরো পড়ুন: তুলসি পাতার গুনাগুন ও উপকারিতা
লেখকের মন্তব্য: প্রিয় পাঠক বিভিন্ন তথ্য থেকে সংগ্রহ করে আপনাদের জন্য এই পোস্টটি লিখা হয়েছে। যেকোন সমস্যা হলো দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইড ফলো রাখতে পারেন। ধন্যবাদ
কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম
একমুঠো ছোলা রাতের বেলা পানিতে ভাল করে ধুয়ে নিয়ে তার পর সেই ছোলা পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন এবং সকালে সেই ছোলা খালিপেটে খেয়ে নিয়ে পারেন। তবে আপনি যদি এর সঙ্গে আদা, সামান্য পরিমান গোলমরিচ ও হিমালয়েন পিং সল মিশিয়ে খেতে পারলে এর পুষ্টিগুন আরো অনেক বৃদ্ধি পায়।কাঁচা ছোলা খাওয়ার পরিমান
আপনি যদি কাঁচা ছোলা খেতে চান তাহলে এর কিছু নিয়ম রয়েছে। আপনি ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম কাঁচা ছোলা খেতে পারেন। বা ১ মোঠ পরিমান। আর এতটুকু ছোলাতে যে পরিমান উপাদান রয়েছে তাই আপনার শরীরের জন্য যথেষ্ঠ। আর এ নিয়য়ে প্রতিদিন খেতে হবে।কাঁচা ছোলা খাওয়া সময়
ছোলা সব সময় খাওয়া যেতে পারে। তবে সবথেকে অল্লেখযোগ্য উ ভাল সময় হলো সকালে খালিপেটে খাওয়ায়।ছোলা ভেজানো পানি খাওয়া যাবে কি
হা আপনি যদি ছোলা ভাল করে ধুয়ে তার পর ভিজান তাহলে আপনি সেই ভেজানো পানি পান করতে পারেন। কারণ ছোলা ভেজানো পানিও খুব উপকারি।কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়
অনেকেই এই প্রশ্নে থাকেন। তাই বলা যায় যায় ছোলা যেহেতু একটি ভিটামিন, প্রোটিন সহ বিভিন্ন উপাদানে পরিপূর্ণ একটি খাবার। তাই আপনি যদি ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে নিয়মিত ছোলা খেতে পারেন। তাহলে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন।কাঁচা ছোলা খেলে কি হয়
পুষ্টিকর খাদ্য উপাদানের মধ্যে অত্যতম হল ছোলা, তবে ছোলা কাঁচা অবস্থায় খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যায়। কারণ নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে, ফলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল থাকে যা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। তাছাড়া কাঁচা ছোলা ফলিড এসিডযুক্ত খাবার তাই কাঁচা ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।প্রতিদিন কতটা ছোলা খাওয়া উচিৎ
ছোলার মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের খনিজ, ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার রয়েছে যা আমাদের শরীরের পক্ষে প্রচন্ড উপকারি তবে অতিরিক্ত ছোলা খাওয়ায় যে কোন মানুষের শরীরে ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন একজন সুস্থ্য মানুষের জন্য ২৫ গ্রাম থেকে ৩০ গ্রাম ছোলা খাওয়াই যথেষ্ট।ছোলা ভিজানো পানি খেলে কি হয়
সকলেরই জানা আছে যে ছোলা প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর কিন্তু ছোলা ভিজানো পানি খেলেও যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ছোলা ভিজানো পানি খেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা অনেকটাই কমতে শুরু করে। তাছাড়া এই পানিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরে জমে থাকা দূষিত পদার্থকে বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে। ফলে পেটের যে কোন সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ছোলা ভূমিকা
অনেক সময় দেখা যায় কিছু কিছু মানুষেল মল বাইরে নির্গমনে অসুবিধা হয়। ফলে শরীরের অভ্যন্তরে মল জমে গিয়ে কঠিক আকার ধারণ করে পেটে গ্যাসের সৃষি।ট করে। যা ধীরে ধীরে কোষ্ঠকাঠিন্যে পরিণত হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন কাঁচা ছোলা খাওয়ার অভ্যাস শুরু করলে এই সমস্যা দ্রুত নির্মূল হবে। কারণ ছোলার খাদ্য-আঁশ থাকে যা কঠিন মল নরম করে দেয় এবং মলের পরিমানও বাড়িয়ে তোলে। ফলে মল নির্গমনে সুবিধা হয়। যা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।ব্যায়াম করার পর ছোলা খেলে কি হয়
বর্তমানে শরীরকে ফিট রাখার জন্য বেশীরভাগ ছেলে মেয়েরাই ডিমে যাওয়া শুরু করেছে তবে জিম করার পর সাধারণত শরীর ক্লান্ত ও অবসন্ন লাগে। কারণ শরীর থেকে অনেকটাই ক্যালরী খরচ হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলে জিম করার পর শরীরের হারানো শক্তি ফিরে পেতে কাঁচা ছোলা খাওয়া উচিৎ। তবে পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপরই খেতে হবে কারণ এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, ফ্যাট, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন-বি১, ভিটামিন-বি২।ছোলা খাওয়ার পর কি খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হয়
আসলে সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার পর ভুলেও কোন রকমের আচার খায়া উচিত না । কারণ আচারের মধ্যে ভিনিগার দেওয়া থাকে যা কাঁচা ছোলার সাথে মিশে গিয়ে শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং এর প্রভাবে গলা-বুক জ্বালা ও অম্বলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা অনেক সময় হার্ট এট্যাক পর্যন্ত হতে পারে।ছোলা খাওয়ার পর করলা খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার কিছুটা সময় পরেই অনেক মানুষ আবার টিফিন খাওয়া শুরু করে দেয়। তবে সকালে টিফিনে ভাত খাওয়ার সময় করলা খাওয়া উচিৎ না। কারণ কাঁচা ছোলাতে যে অক্সাইড পাওয়া যায় তা করলার মধ্যে অধিক মাত্রায় থাকে। ফলে কাঁচা ছোলা খাওয়ার পর করলা খেলে শরীরে গভীর অসুখের সৃষ্টি হতে পারে। এবং তা খুবই ধীরে ধীরে ঘটতে শুরু করবে।কাঁচা ছোলা খেলে কি শরীরের ওজন কমে
কাঁচা ছোলার মধ্যে পুচুর পরিমাণে খনিজ, ভিটামিন, আঁশ রয়েছে তাই কাঁচা ছোলা খাওয়ার পর দীর্ঘক্ষন পেট ভরা ভরা থাকে। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়র হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফলে শরীরের ওজন এমনিতেই নিয়ণ্ত্রণে থাকে, শরীরের ওজন কমেনা।কাঁচা ছোলা ও আদা একসাথে খেলে কি হয়
প্রোটিন সমৃদ্ধ কাঁচা ছোলা খেলে আমাদের শরীরে উপকার হয়। তবে কাঁচা ছোলার সাথে আদা মিশিয়ে খেলে এই উপকার আরও বৃদ্ধি পায়। কারণ কাঁচা ছোলায় থাকা আমিষ আমাদের শরীরের শক্তিশালী আর স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে। আবার আদায় থাকা অ্যাক্টিবায়োটিক আমাদের শরীরকে যে কোন অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফলে শরীর থাকে সুস্থ্য।কাঁচা ছোলা না রান্না ছোলা কোনটি বেশি উপকারি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন রান্না করা ছোলা থেকে কাঁচা ছোলা খাওয়া আমাদের শরীরের পক্ষে বেশি উপকারি। কারণ কাঁচা ছোলাতে ভিটামিন বি এর পরিমান বেশি থাকে। ফলে বেরি বেরি রোগ এবং মস্তিষ্কের গোলযোগ খুব সহজেই দূর হয়। তাই প্রতিদিন একমুঠো কাঁচা ছোলা কাওয়ার অভ্যাস শুরু করা উচিত।উপসংহার
ছোলা ছোট ছোট ডাল বীজ জাতীয় একটি খাবার। আর ছোলার মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারী অনেক পদার্থ। যা আপনার শরীরে সুস্থ্য রাখার পাশাপাশি আপনার শরীরের সৌন্দয্য বৃদ্ধি করে এবং শরীর মজবুত করে। তাই আপনি যদি সুস্থ্য শরীরর পেতে চান তাহলে নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেতে পারেন।লেখকের মন্তব্য: প্রিয় পাঠক বিভিন্ন তথ্য থেকে সংগ্রহ করে আপনাদের জন্য এই পোস্টটি লিখা হয়েছে। যেকোন সমস্যা হলো দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইড ফলো রাখতে পারেন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url