অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম

আমাদের সকলেরই প্রায় জমি রয়েছে। কিন্তু জমির খাজনা দেওয়া আামদের কাছে অনেক বিরম্বনার একটি কাজ। আমাদের মাঝে অনেকে আছে যারা বিভিন্ন অফিসে যেতেও ভয় পায় না জানি কি বলে সেই ব্যপারে। এমন বিরম্বনার দিন শেষ। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার আধুনিকতার ধারাবাহিকতায় নিয়ে এসেছে ভুমি মন্ত্রণালয়ে। ভূমি মন্ত্রণালয়ে লেগেছে আধুনিকতার ছোয়। তাই অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানুন এ পাস্টের মাধ্যমে।
 
অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম

বর্তমান যুগ আধুনিক যুগ। এ যুগে কোন দেশ আর পিছিয়ে পড়ে নাই। সকল দেশের সকল সেক্টরে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কোন দেশ কিভাবে উন্নতি করতে সে ব্যাপারে ছুটছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশের সরকারও দেশকে এগিতে নিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিভিন্ন সেবার মান উন্নয়ন করতে।

ভূমিকা

আমাদের যাদের জমি রয়েছে তাদের বেশিরভাগ হয় কৃষক অথবা বিভিন্ন ভাল কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত যার কারণে ভূমি অফিসে গিয়ে আমাদের খাজনা সময়মত দেওয়া সম্ভব হয়না। এতে করে সরকারের প্রতিবছর অনেক টাকা রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়না। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সমস্যা। যারা খাজনা দেয় তাদের টাকাও সঠিক ভাবে সরকারি কোষাগারে জমা হয়না। তাই সরকার নিজে এসেছে হয়রানি ছাড়া অনলাইনে খাজনা দেওয়ার পদ্ধতি।

অনলাইনে খাজনা দেওয়ার আবেদন করার নিয়ম

আমরা যারা অনলাইনে খাজনা দিতে চাই তাদের প্রথমে অনলাইনে খাজনা দেওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার জন্য প্রথমে www.land.gov.bd এই ওয়েব সাইডে প্রবেশ করে ভূমি উন্নয়ন কর এই বাটনে ক্লিক করতে হবে। অথবা সরাসরি www.ldtax.gov.bd এই লিংকেও প্রবেশ করতে পারেন।
 
এর পর নাগরিক কর্ণার নামক একটি লেখা দেখা যাবে সেখানে ক্লিক করলে নাগরিক নিবন্ধন, নাগরিক লগইন ও সংস্থা লগইন নামক তিনটি লেখা দেখা যাবে। যদি নিবন্ধন না করা থাকে তাহলে প্রথমে যার নামে জমি রয়েছে তার এনআইডি কার্ড ও একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে নাগরিক নিবন্ধন এ ক্লিক করে মোবাইল নম্বর ও সংখ্যা যোগফল লিখে পরবর্তী পদক্ষেপ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
 
ক্লিক করার পর মোবাইলে একটি ওটিপি আসবে সেটি বসিয়ে একটি পার্সওয়ার্ড টাইপ করুন। যার মধ্যে একটি A-Z এর মধ্যে যে কোন একটি অক্ষর 0-9 এর মধ্যে সংখ্যা এবং ইস্পেশাল চিহ্ন যেমন @#* যে কোনটি ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। তবে মনে রাখতে হবে পাসওয়ার্ড সর্ব নিম্ন ৮ সংখ্যার হতে হবে। পার্সওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর আপনাকে প্রথমে খাজনা দেওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে।

খাজনার আবেদনে যে যে কাগজ প্রয়োজন হবে

জমির মালিক যদি নিজে আবেদন করে তাহলে পূর্বের প্রদানকৃত খাজনার চেক ও খতিয়ান এর কাগজ এবং জমির মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র এর ফটোকপি প্রয়োজন হয়। এবং জমির মালিকের নামে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আর যদি মালিক একাধিক হয় তাহলে একজনের আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে অন্যান্য মালিকের আইডি কার্ডের ফটোকপি ও খাজনা পরিশোধের চেক এবং খতিয়ান স্ক্যান করে পিডিএফ করে নিতে হবে। তবে পিডিএফ এর সাইড ১ মেগাবাইটের মধ্যে হতে হবে।

জমির মালিক যদি না থাকে বা মারা গিয়ে থাকে তাহলে তার ওয়ারিশ সার্টিফিকেট সহ তার স্ত্রী অথবা সন্তান অথবা কণ্যা যে কেউ তার আইডি দিয়ে নিবন্ধন করে আবেদন করতে পারবে। আবেদন করতে আপনাকে খতিয়ান নামক লেখা সাইডে দেখা যাবে। সেখানে ক্লিক করে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, মৌজা, খতিয়ান নম্বর এবং হোল্ডিং নম্বর লিখে পাশে থাকা ব্রাউজে ক্লিক করে পিডিএফ সংযুক্ত করতে হবে এবং সংযুক্ত করা হলে সেভ করতে হবে। তাহলেই আবেদন করা শেষ।

আবেদন করার পর আপনাকে ৩ কর্মদিবস অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষাকরার পরও যদি আবেদন অনুমোদন না হয় তাহলে আপনার তহসিল অফিসে উক্ত সমস্ত কাগজ নিয়ে দেখা করে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।

অনলাইনে খাজনা দেওয়ার নিয়ম

আপনার বেদন সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ হয়ে থাকলে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদনটি অনুমোদন হবে। আবেদন অনুমোদন হলে আপনি খাজনা দেওয়ার জন্য হোল্ডিং অফসনে প্রবেশ করে বিস্তারিত লেখার উপর ক্লিক করুন। ক্লিক করলে পরবর্তী পেজে আপনাকে নিয়ে যাবে। সেখানে পেমেন্ট করুন নামক অফসনে ক্লিক করে আপনার মোবাইলে বিকাশ, নগদ, রকেট যে কোন মোবাইল ব্যাংকিং সিলেক্ট করে মোবাইল নম্বর দিতে হবে।

মোবাইল নম্বর দিলে আপনার মোবাইলে একটি ওটিপি আসবে। ওটিপি সঠিক ভাবে বসানো হলে আপনার কাছে পাসওয়ার্ড চাইবে পাসওয়ার্ড দিলেই আপনার কাজ শেষ। আপনার মোবাইল থেকে সমপরিমান টাকা কেটে নিবে এবং আপনাকে খাজনা পরিশোধের দাখিলা দেওয়া হবে। আপনি সেটি প্রিন্ট করে নিজের কাছে রাখবেন। এছাড়াও আপনার সুবিধার জন্য আপনার প্রফাইলে দাখিলা নামক একটি অপসন রয়েছে সেখানে সেই দাখিলাটি যুক্ত থাকবে। পরবর্তীতে আপনি সেটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।

খানজা অগ্রিম দিতে চাইলে কি করবেন

কেউ যদি খাজনা অগ্রিম দিতে চাই তাহলে তাকে প্রথমে হাল দাবি পরিশোধ করতে হবে। হাল দাবি পরিশোধ করার পর আপনার সামনে অগ্রিম পরিশোধ করুন নামক নামক একটি বাটন দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করে আপনি ১ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত অগ্রিম খাজনা পরিশোধ করতে পারবেন।

উপসংহার

আধুনি যুগে অফিসে গিয়ে কাজ কাম ফেলে রেখে খাজনা দেওয়ার জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরার দিন শেষ। তাই আপনি অতি নিরাপদি ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে নিজের খাজনা সঠিক ভাবে পরিশোধ করুন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই।

লেখকের মন্তব্য: সরকারকে তার সঠিক রাজস্ব আদায়ের জন্য আপনি ঘরে বসে উক্ত নিয়মে নিরাপদ ভাবে জমির খাজনা পরিশোধ করতে পারেন। এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েস সাইডে ঘুরে আসতে পারেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url