গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও এর বিভিন্ন পুষ্টিগুন

গাজর আমরা কম বেশি সকলে এর সাথে পরিচিত। গাজরে রয়েছে বিভিন্ন উপদান যা আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আমাদেরকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও এর বিভিন্ন পুষ্টিগুন সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচের পোস্টটি গুরুত্ব সহকারে পড়ুন।
গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও এর বিভিন্ন পুষ্টিগুন
 
গাজর একটি মৌসুমি সবজি। যা আমরা কাঁচা ও রান্না উভয় অবস্থাতে খেয়ে থাকি। এটি মানব শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি উপাদান। তাই আপনি নিয়মিত গাজর খেতে পারেন।

ভূমিকা

গাজর চিনেনা এমন কাওকে পাওয়া যাবেনা। কিন্তু গাজরের মধ্যে রয়েছে এমন কিছু পুষ্টিগুন যা আপনাকে সুস্থ্য রাখে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগ সরাতে ব্যপক ভূমিকা রাখে। তাই আপনি যদি সঠিক নিয়মে গাজর এর ব্যবহার করেন।
 
 

কাজর খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়

দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে গাজর

গাজরে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন যা আপনার দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং লিবারে গিয়ে ভিটামিন এ তে বদলে যায়। যা পরে চোখের রেটিনায় গিয়ে পৌছিয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও রাতের বেলায় অন্ধ্যকারে চোখে ভাল দেখার জন্য দরকারি এক প্রকার বেগুনি পিগ্নেন্ট এর সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায করে গাজর।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে গাজর

গাজরে রয়েছে Falcarinol ও Falcariniol যা আমাদের শরীরে এন্টিক্যান্সার উপাদানগুলোকে রিফিল করে। তাই গাজর নিয়মিত খেলে ব্রেস্ট, কোলন, ফুসফুসের eating-carrots ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম করতে সাহায্য করে।

যৌবন ধরে রাখতে

গাজর শুধু আমাদের শরীরের জন্য ভাল তাই নয়। এটি আমাদের শরীরে এন্টি এজিং উপাদান হিসাবেও কাজ করে। গাজরে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন যা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত সেলগুলোকে ঠিকঠাক করে যা সাধারণ মেটাবোলিজমের কারনে হয়ে থাকে। এছাড়াও এটি এজিং সেলগুলোর গতি কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে আপনার যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
 
আরো পড়ুন:মেথির গুনাগুন ও উপকারিতা

গাজরে ত্বক সুন্দর করে

আপনি যদি সুন্দর ত্বক চান তাহলে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন। গাজর আপনার ত্বকে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলে। গাজরে থাকা ভিটামিন এ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দুর করে থাকে। সেইসাথে গাজরে থাকা ভিটামিন এ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ, যে কোন কালো দাগ, ব্রননের দাগ ও ব্রন, ত্বকের রঙের অসামাঞ্জসতা ইত্যাদি দুরকরে থাকে গাজর।
গাজরের গাছের ছবি

ইনফেকশান থেকে রক্ষ করে গাজর

গাজর একটি ভালো এন্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে। আপনার কোথাও কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে সেই ক্ষত স্থানে আপনি গাজরে পেস্ট বানিয়ে লাগালে এটি ইনফেকশান থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।

ফেশিয়াল হিসাবে গাজর

গাজর ত্বকের উপরীভাগেও খুব ভাল কাজ করে। আপনি এটি পেস্ট বানিয়ে আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন। যা আপনার ত্বকের উজ্জল বৃদ্ধি করে ত্ব ভাল রাখে।

হৃদপিন্ডের বিভিন্ন উপকার করে গাজর

গাজরে রয়েছে ক্যারোটিন ওয়েড যা হৃৎপিন্ডের নানা অসুখের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। যেসব খাবারে যেমন গাজরের উচ্চমাত্রাই এই উপাদান পাওয়া যায় সেসব খেলে সেসব খেলে হৃৎপিন্ডের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে আসে।

লিভার ভাল রাখে গাজর

গাজর খেলে গাজরে থানা বিভিন্ন উপাদান শরীর থেকে নানা ধরনের টক্সিন জাতীয় খারাপ উপাদানগুলো বের করে লিভার ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজর লিভার থেকে অতিরিক্ত চর্বি বের করে দিতেও সাহায্য করে। সেই সাথে গাজর এ থাকা ফাইবার আমাদেরকে কোষ্ঠ্যকাঠিন থেকে রক্ষা করে।

দাঁতের জন্য উপকারী গাজর

গাজর খাওয়ার ফলে আমাদের দাঁত সুন্দর থাকে। গাজর খাওয়ার ফলে আমাদের মুখে থাকা অন্যান্য খাবার কণা গুলো পরিষ্কার করে গাজর। এছাড়াও গাজরে থাকা উপাদান আমাদের দাঁত শক্ত মজবুত ও দাঁত পরিষ্কার রাখতেও সহায়তা করে।

স্টোকের ঝুকি কমায়

এক গবেষনায় দেখা গেছে যারা প্রতি সপ্তাহে নিম্ন ৬টি করে গাজর খেয়ে থাকেন তারা যারা গাজর কম পরিমান খায় বা গাজর খায়না তাদের থেকে স্টোক হওয়ার ঝুকিতে কম থাকে যারা সপ্তাহে অন্তত ৬টি করে গাজর খেয়ে থাকেন।
গাজর কাঁচা খাবো না রান্না করে খাবো
আমরা মুলত গাজর কাঁচা খেয়ে অভ্যস্ত। গাজর কাঁচা খাওয়া ভাল তবে যদি কেউ গাজর রান্না করে খায় তাহলে সেটি আরো ভাল। কারন গাজর যখন রান্না করার জন্য কাটা হয় তখন এর মধ্যে থাকা উপাদানগুলো আরো ভালো কাজ করে আমাদের শরীরে।রান্না করা গাজর এর মধ্যে ক্যারোটিনওয়েড্ রয়েছে। যা আমাদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

রুপ চর্চায় গাজর এর উপাদান

যাদের ড্রাই স্কিন তারা গাজর খুব সুন্দর করে পেস্ট করে নিয়ে তার সঙ্গে এক চামচ দুধ ও এক চামচ মধু মিশিয়ে আপনি আপনার মুখে মেখে নিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে শুকিয়ে নিয়ে তার পর সেটি সুন্দর করে ধুয়ে ফেলুন। একই নিয়মে সপ্তাহে ২ দিন করলে আপনার ত্বক মইশচারাই করে ও ত্বক নরম করে।

যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা গাজর এর পেস্ট করে তার সঙ্গে অল্প পরিমান বেসন ও টক দই নিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর তা হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তাহলে আপনার ত্বক উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়। যা সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় গাজরের উপকারিতা

গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন এ। তাই আপনি গর্ভাবস্থায় গাজর প্রতিদিন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারন একজন গর্ভবতি মায়ের শরীরের প্রচুর পরিমনা ভিটামিন এ এর উপস্থিত থাকলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন গাজর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

সিদ্ধ গাজরের উপকারিতা

গাজর কাঁচা খাওয়া ভাল। তবে কেউ যদি গাজর সেদ্ধ করে খেতে চায় তাহলে এর উপকারিতা অনেক। কারন গাজর কাটার পরে সেদ্ধ করা হলে এর মধ্যে থাকা উপাদানগুলো আরো ভাল কাজ করে। তাই আপনি যদি গাজরের ভাল ফলাফল পেতে চান তাহলে গাজর সিদ্ধ করে খেতে পারেন।

গাজর খেলে কি প্রেশার বাড়ে

যারা মনে করে গাজর খেলে প্রেশার বাড়ে সেই ধারনা ভুল। কাজর খেলে পেসার বাড়ে না বরং প্রেশার নিয়ন্ত্রনে রাখতে গাজর বিশেষ ভূমিকা পালন করে।গাজরে রয়েছে পটাশিয়াম যার ফলে গাজর শরীরের উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্র করে থাকে।
গাজরে কি কি উপাদান রয়েছে
গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে,ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, আয়রন, বিটাকেরোটিন।

গাজরের জুস
গাজর কারা খেতে পারবেনা

যাদের কিডনি রোগ রয়েছে তারা গাজর খাওয়া থেকে বিরত থাকরতে হবে। কারণ গাজরে রয়েছে বিভিন্ন উচ্চমাত্রা সম্বলিত উপাদান যা কিডনির সমস্যা বাড়াতে পারে। এছাড়াও যারা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তাদের গাজর খাওয়ার ব্যপারে সচেতন হতে হবে। তারা যদি গাজর খেতে চান তাহলে সর্বচ্চো ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম খেতে পারেন।

উপসংহার

গাজর খুব উচ্চমাত্রায় ভিটামিন যুক্ত একটি সবজি। এটি মুলত শীতকালে বেশি পাওয়া যায়। গাজর কয়েক প্রজাতির হয়ে থাকে। তবে আমরা হলুদ রংয়ের সাথে বেশি পরিচিত। আমাদের সকলের কাজর খাওয়া উচিত। এটি যেমন সস্তা তেমনি এর রয়েছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগুন।

লেখকের মন্তব্য:
প্রিয় পাঠক আপনি যদি গাজর না খেয়ে থাকেন তাহলে আজই গাজর খাওয়া শুরু করে দিন। নিয়ম মেনে গাজর খান সুস্থ থাকুন।এরোকম আরো ভাল ভাল পোস্ট পেতে আমাদের পেজে ঘুরে আসুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url