ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও ডেঙ্গু প্রতিকারের উপায়
ডেঙ্গু বর্তমানে এক ভয়ানক রুপ ধারন করছে। বিশেষ করে ঢাকাতে এর প্রবনতা সবথেকে বেশি। এর সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে সারা দেশেও ডেঙ্গু রোগের প্রবনতা বেড়ে চলছে। ডেঙ্গু রোগ বিশেষ করে এক ধরনের মোশার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। তাই আমাদের মাঝে মাঝে জ্বর হয়ে থাকলেও আমরা বুঝতে পারিনা এটি কি ডেঙ্গু জ্বর কি অন্য কিছু। তাই এই পোস্টের মাধ্যমে জেঙ্গু জ্বরের লক্ষন ও ডেঙ্গু প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ডেঙ্গু বর্তমানে ভয়ানক রুপ ধারন করছে। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে দিন দিন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অগনিত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভূমিকা
ডেঙ্গু জ্বর এক ধরনের মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। আর এ মশা বংশ বিস্তার করে বাড়ির আশে পাশে বা যে কোন স্থানে জমে থাকা পানির মাধ্যমে। ডেঙ্গু জ্বর সাধারন জ্বরের মতই কিছু দিন পর ভাল হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু সময় এটিও মহামারী আকার ধারন করতে পারে। তাই ডেঙ্গু জ্বরকে একেবারে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা ঠিক হবেনা।জেঙ্গু জ্বরের লক্ষন
ডেঙ্গু এক ধরনের মোশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গু সাধারণত লক্ষন হলো হঠাৎ করে কারো শরীরের প্রচন্ড জ্বর আসতে পারে যা ১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি হয়ে থাকে। সাথে প্রচন্ড শরীর ব্যথা, মাথ্যা ব্যথা, চোখ ও চোখের ভিতর ব্যথা, বমি বমি ভাব বা বহি হতে পারে, সাথে নরম পাইখানা বা ডায়রিয়াও হতে পারে। মেয়েদের ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত পিরিয়ড হতে পারে যেমন সময় ওয়ার আগে পিরিয়ড হওয়া, এ সময় অতিরিক্ত ব্লিডিং হওয়া এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কান্নার সময় চোখে পানি না আসা বা ঠোক শুকেয়ে থাকা।আরো পড়ুন: চিকেন পক্স এর লক্ষন ও প্রতিকার
ডেঙ্গু জ্বর কতদিন থাকে
সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর হলে ৪-৫ দিন স্থায়ী হয়ে থাকে। কোন কোন সময় এটি কিছু দিন বৃদ্ধিও পেতে পারে। তাই জ্বর হলে সাধারন জ্বর হিসাবে বসে না থেকে সঠিক সময় ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।ডেঙ্গু হলে মানুষ মারা যায় কি
ডেঙ্গু সাধারণত কারো যদি প্রথম বার হয়ে থাকে তাহলে সে মারা যায় না বা এটি তেমন কোন ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে মনে রাখতে হবে এই ডেঙ্গুর ৪টি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। প্রথমটিতে আক্রান্ত হলে তেমন কিছু হয় না কিন্তু দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার যদি আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। এ সময় ব্লিডিং হতে পারে। যেমন কাশির সঙ্গে, নাখ দিয়ে, দাতের মাড়ি দিয়ে ত্বকের এক ধরনের র্যাশ দিয়ে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বা অনেক সময় মানুষ মারাও যেতে পারে।ডেঙ্গু জ্বর কি একাধিকবার হতে পারে
সাধারণত বসন্ত বা চিকেন পক্স, হাম বা এ ধরনের রোগ জীবনে একবার হতে পারে। তবে একাধিকবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক কম। কারণ এ ধরনের রোগ ভাইরাস জনিত ও এক ধরনের ভাইরাসের দ্বারা হয়ে থাকে। কিন্তু ডেঙ্গ মুলত ৪ ধরনের ভ্যরিয়েন্ট দ্বারা হয়ে থাকে। যার প্রথমটিতে তেমন ঝুকিপূর্ণ না হলো পরবর্তীতে আক্রান্ত হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।আরো পড়ুন: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন রাখার কৌশল
লেখকের মন্তব্যঃ প্রিয় পাঠক কারো মধ্যে এ ধরনের কোন লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই বসে না থেকে ডাক্তারের পরার্শ গ্রহণ করুন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের পেজে ঘুরে আসুন। পোস্টটি পড়ে উপকৃত হলে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে পোস্টটি শেয়ার করুন। ধন্যবাদ
ডেঙ্গু জ্বরের বাহক কোন মশা
বিভিন্ন ধরনের মশা রয়েছে। তবে সব মশাতে কামড়ালে ডেঙ্গু হয় না। ডেঙ্গু জ্বর হয় এডিম মশার কারনে। তাই একমাত্র এডিশ মশাই হলো ডেঙ্গু বাহক মশা।ডেঙ্গু মশা কিভাবে বংশ বিস্তার করে
এডিশ মশা বংশ বিস্তার করে জমে থাকা পানির মাধ্যমে। যেমন আমাদের বাড়ির ছাদে টবে জমে থাকা পানি, বৃষ্টির জমে থাকা পানি, ডাবের খোলে জমে থাকা পানি বা টায়ারের মধ্যে জমে থাকা পানিতে এডিম মশা ডিম দিয়ে থাকে। যেখান থেকে হাজার হাজার মশা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তবে চলতি পানিতে এই মশা বংশ বিস্তার করতে পারেনা। তবে উল্লেখ যে এই মশা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন স্থানে থাকতে একটু বেশি ভালবাসে।ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়
ডেঙ্গু মশা যাতে বংশ বিস্তার করতে না পারে সে জন্য নিয়মিত আমাদের ছাদে থাকা টব পরিষ্কার রাখতে হবে কোথাও যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ডাবের খুলি বা পলেথিন ও টায়েরে পানি জমতে দেওয়া যাবেনা। জমে থাকলে তা ফেলে দিতে হবে। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মোশারি ব্যবহার করতে হবে ও অন্য সময় মশা নিধরক ব্যবহার করা জরুরীডেঙ্গু জ্বর হলে কি কি খেতে হবে
কারো যদি ডেঙ্গু জ্বরে হয়ে থাকে তাহলে তাকে প্রচুর পরিমান ভিটামিন, মিনারেল যুক্ত খাবার সাথে প্রোটিন ও আয়রন রয়েছে এ ধরনের খাবার গ্রহণ করতে হবে। খাবারের মধে ডিম, দুধ, মাংস, মাছ, বেদেনা (রস), পেঁপেঁ পাতার রস, ব্রকলি, পালং শাক খেতে পারেন। তবে শক্ত খাবারের তুলনায় নরম খাবার বেশি ভাল। যেমন মুরগির মাংসের সুপ, ফলের রস যে সময় খাবার দ্রুত হজম হবে এমন।ডেঙ্গু জ্বরে রক্ত পড়া বন্ধ করতে
এ জ্বরে আক্রান্ত রুগীর নাখ, মুখ, মাড়ি বা পিরিয়ডের সময় অরিক্তি ব্লিডিং বন্ধের জন্য ভিটামিন সি যু্ক্ত খাবার বেশি বেশি খতে হবে এছাড়াও ডিম, দুধ, মাংস, মাছ, বেদেনা (রস),খেতে পারেন।পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া বন্ধের জন্য
এ জ্বরে আক্রান্ত রুগীর পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে তাই এই পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে কাঁচা কলা ও বেদেনা ফলের রস খেতে পারেন। যা অন্যন্ত ভাল কাজ করে।ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রুগীর বমি হলে
আপনার যদি বমি হয়ে থাকে আর সে জন্য কিছু খেতে পারছেননা তাহলে আপনার খাদ্যের সাথে লেবু রস মিশাতে পারেন। এতে করে খাবারে একটি সুগন্ধ যুক্ত হবে যা আপনার বমি বমি ভাব দুর করতে সাহায্য করতে পারে।ডেঙ্গু জ্বর হলে কি ঔষধ খাব
সাধারণত বড়দের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু জ্বর হলে একমাত্র প্যারাসিটামল খেতে পারেন। এ বাহির অন্য কোন ঔষধ খাওয়া ঠিক নাও হতে পারে। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।উপসংহার
সর্বপুরি কথা হলো ডেঙ্গু কিছু কিছু সময় খুব মহামারি আকার ধারন করতে পারে। জ্বর হলে সাধারন কিছু মনে করবেন না। সেক্ষেত্রে এ রোগের কোন লক্ষন বুঝতে পারলেই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চলতে হবে।লেখকের মন্তব্যঃ প্রিয় পাঠক কারো মধ্যে এ ধরনের কোন লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই বসে না থেকে ডাক্তারের পরার্শ গ্রহণ করুন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের পেজে ঘুরে আসুন। পোস্টটি পড়ে উপকৃত হলে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে পোস্টটি শেয়ার করুন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url