আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
আনারস চিনে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবেনা। আনারস দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি পাকা আনারসের ঘ্রান মানুষকে আকৃষ্ট করে অনেক সহজে। আনারসের প্রথম উৎপাদন শুরু হয় ব্রাজিল দেশে। এর পর এই ফলটি ইউরোপ ও তার পর এটি এশিয়া মহাদেশে বিস্তার লাভ করে। আমরা অনেকে আনারস পছন্দ করি আবার অনেকে খেতে চাইনা এই ফল। তাই এপোস্টের মাধ্যমে আজ বলতে চলছি আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো।
আনারস একটি সু-মিষ্ট স্বাদযুক্ত ফল। এটি মুলত মৌসুমি ফল। এই ফলটি বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রচুর পরিমান জন্মে থাকে। ফলটি মুলত পিচ হিসাবে বিক্রি হয়ে থাকে।
ভূমিকা
আনারস এমন একটি ফল যেটি যে গাছে ধরে তার নিজে গাছের অংশ থাকে আবার ফলের উপরে বাকি অংশ বিরাজমান থাকে। কাঁচা অবস্থায় এটি কালচে সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে এবং পাকার সময় সময় ভেদে এটি হলুদ ও লাল বর্নের হয়ে যায়। এটি মুলত পাকা অবস্থায় খাওয়া য়ে থাকে। এই ফলটি পাকলে খুব সুন্দর ঘ্রাণের সৃষ্টি হয় যা আমাদের তার দিকে আকৃষ্ট করে।আনারস খাওয়ার উপকারিতা
আনারসে রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, হাই লেভেলের ব্রোমেলিং, পটাশিয়াম ও ফসফরাস সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা আমাদের শরীরের নানা বিধ উপকার করার পাশাপাশি আমাদের রোগমুক্তির জন্য বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে। এখন আসুন আনারস খাওয়া উপকারিতাগুলো জানা যাক।আরো পড়ুন: কাঁচা সোলা খাওয়ার উপকারিতা
সর্দি, কাশি, ঠান্ডা লাগা রোগ সারাতে আনারস
কারো যদি সর্দি লাগা, কাশি বা ঠান্ডা লাগা জনিত কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সে অনায়াসে আনারস খেতে পারে। কারনে আনারসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের এ ধরনের রোগ সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।ক্ষিদে বাড়াতে আনারস
আনারসে রয়েছে উচ্চমাত্রা ব্রোমেলিং যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যার ফলে আমাদের ক্ষিদে লাগা বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায় আপনি ক্ষিদে বাড়াতে চাইলে আনারস খেতে পারেন।মুখে রুচি আনে আনারস
কারো মুখে যদি রুচি কমে যায়। যার ফলে খেতে পারছেনা বা খাওয়ার প্রতি অনিহা রয়েছে। তাহলে সে অনায়াসে আনারস খেতে পারেন। কারণ আনারস মুখে রুচি আনতেও সাহায্য করে।কৃমি দুর করতে আনারক
পেটে কৃমি থাকলে আপনি যাই খান যতই খান শরীরের কোন উপকারে আসবে না। সেই জন্য আপনার পেটের কৃমি দুর করতে চাইলে আপনি আনারস খেতে পারেন। এটি পেটে থাকা কৃমিকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে।জন্ডিস ভাল করে আনারস
কারো শরীরে জন্ডিস থাকলে সে আনারস খেতে পারেন। কারন আনারস জন্ডিস ভাল করতে খুব ভাল কাজ করে থাকে।জ্বর ভাল করে আনারস
আনারসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরের জ্বর ভাল করে থাকে। তাই আপনার যদি জ্বর হয়ে থাকে আর তা সারাতে পারছেন না কোন ঔষধ খেয়েও তাহলে আপনার জন্য খুব ভাল পরামর্শ হলো আপনি আনারস খেয়ে দেখুন।ব্যথা-বেদন দুর করে আনারস
আপনার শরীরে যদি কোন ব্যথা-বেদনা থাকে তাহলে আপনি আনারস খেতে পারেন। আনারস ব্যথা নিরাময়ক হিসাবেও খুব ভাল কাজ করে থাকে। বিশেষ করে হাটুর ব্যাথা ক্ষেত্রে খুব ভাল কাজ করে আনারস।আরো পড়ুন: গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুন
আনারস বেশি খেলে মুখ ও জিহব্বা ছিয়ে যায়। যার ফলে পরবর্তীতে কিছু খেলে বা ঝাল জাতীয় কিছু খেতে লাগলে মুখে প্রচুর পরিমান ঝাল ধরে। এছাড়াও মুখ চুলকায় কারো এলার্জি সমস্যা থাকলে ত্বক চুলকায়, ত্বকে লালচে বর্নের দাগ পড়ে। কারো কারো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। বদ হজম সহ ডায়রিয়া, এসিডিটি দেখা দিতে পারে আনারস প্রচুর পরিমান খাওয়ার ফলে।
নারীদের প্রিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তচাপ দেখা দিতে পারে আনারসে ব্রোমেলাইং উপাদান থাকার কারনে।
লেখকের মন্তব্য: আনারস খুব উপকারী একটি ফল। তার পরেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি খাওয়ার ব্যপারে সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরী। তাই আপনি যদি নিয়মিত এন্টিবায়োটিক, ঘুমের ঔষধ ও ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চলেন তাহলে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক আনারস খাওয়া প্রয়োজন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের পেজকে ফলো করতে পারেন। ধন্যবাদ
ব্রংকাইটিস
ব্রংকাইটিস জনিত কোন সমস্যা থাকলে আনারস খুব ভাল কাজ করে থাকে। তাই আপনার এ ধরনের কোন সমস্যা থাকলে আপনি আনারস খেয়েও দেখতে পারেন।দাঁত ও মাড়ির সমস্যায় আনারস
কারো দাঁত ও মাড়ির সমস্যা থাকলে আনারস খেতে পারেন। কারন আনারসে থাকা কিছু উপাদান যা আপনার মাড়ি ফুলে যাওয়া ও দাঁতের যে কোন সমস্যা সমাধান করে থাকে আনারস।চোখের উপকার করে আনারস
আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন-সি যা আমাদের চোখকে ভাল রাখতে অনেক ভাল কাজ করে থাকে। যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি সহ নানা বিধ সমস্যা থেকে ভাল রাখে।ত্বকের যত্নে আনারস
আনারস খেলে ত্বক ভাল থাকে, ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দুর হয় ও ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।হাড় মজবুত রাখে আনারস
আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমান ক্যালশিয়াম, ব্রামেলিং সহ বিভিন্ন উপকারী উপাদান যা হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে।হৃদরোগ ও ক্যান্সার দুর করে আনারস
আনারস খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এছাড়াও আনারসে থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরের ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস করতে সাহায্য করে।আনারস খাওয়ার অপকারিতা সমূহ
আনারস যদিও খুব উপকারি একটি ফল এর পরেও এর কিছু অপকারিতা দিক রয়েছে। এখন আসুন আসারস খাওয়ার অপকারিতা সমূহ জেনে নেওয়া যাক।আনারস বেশি খেলে মুখ ও জিহব্বা ছিয়ে যায়। যার ফলে পরবর্তীতে কিছু খেলে বা ঝাল জাতীয় কিছু খেতে লাগলে মুখে প্রচুর পরিমান ঝাল ধরে। এছাড়াও মুখ চুলকায় কারো এলার্জি সমস্যা থাকলে ত্বক চুলকায়, ত্বকে লালচে বর্নের দাগ পড়ে। কারো কারো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। বদ হজম সহ ডায়রিয়া, এসিডিটি দেখা দিতে পারে আনারস প্রচুর পরিমান খাওয়ার ফলে।
নারীদের প্রিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তচাপ দেখা দিতে পারে আনারসে ব্রোমেলাইং উপাদান থাকার কারনে।
কখন আনারস খাবেন না
কোন ব্যক্তি যদি এন্টিবায়টিক ও ঘুমের ঔষধ খেয়ে থাকেন বা নিয়মিত খান তাহলে আনারস খাওয়া থেকে দুরে থাকুন। খুব আনারস খেতে ইচ্ছা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আনারাস খাবেন।কোন আনারস খাবেন
আনারস খাওয়ার জন্য অবশ্যই সব সময় কাঁচা আনারস খাবেন না। সব সময় পাঁকা আনারাস খাবেন। কারন পাকা আনারস মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে।গর্বাবস্থা আনারস খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারন আনারসে থাকা ভিটামিন সি ও অন্যান্য উপাদান গর্ভপাত ঘটিয়ে থাকে। যার ফলে আপনার ভ্রুনের ক্ষতি হতে পারে।ডায়াবেটিস রোগির ক্ষেত্রে আনারস
আনারসে রয়েছে প্রাকৃতি সুগার যা রক্তে সুক্রোচ ও ফুক্রোচ এর মাত্রা বাড়িয়ে থাকে। যার ফলে ডায়াবেটিস রোগির রক্তে সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায় আনারস খাওয়া থেকে সর্তক থাকতে হবে।সকালে খালি পেটে আনারস খেলে কি হয়
কেউ যদি সকালে খালি পেটে আনারস খেয়ে থাকে তাহলে তার পেটে যদি কৃমি থাকে তাহলে সেই কৃমিগুলো নষ্ট করতে সাহায্য করে আনারস। তাই আপনি সকালে খালি পেটে আনারস খেতে পারেন।আনারস খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে
আনারস খেলে মুখ ও জিহব্বা ছিলে যেতে পারে, ত্বক চুলকাতে পারে, বদ হজম হতে পারে, ডায়রিয়া ও এসিডিটি হতে পারে। মেয়েদের পিরিয়ডের সময় খেলে সমস্যা হতে পারে।আনারস ও দুধ এক সাথে খাওয়া যাবে কিনা
আনারসে রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালশিয়াম ও নানা উপাদান তেমনি দুধে রয়েছে ক্যালশিয়াম সহ বিভিন্ন উপাদান। যার বলে আনারস খেয়ে দুধ খেলে পেটের মধ্যে এক প্রকার ছানার সৃষ্টি হয়ে থাকে যা হজম হতে দেরি হয়ে থাকে বা হজম হতে সমস্যা সৃষ্টি হয়। যার ফলে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু একথা ঠিক নয় যে আনারাস ও দুধ এক সঙ্গে খেলে মানুষ মারা যায়।বাচ্চাকে দুধ পান করানো অবস্থায় আনারস খাওয়া যায় কিনা
বাচ্চাকে দুধ পান করানোর সময় কোন মা যদি আনারস খেতে চান তাহলে কোন সমস্যা নাই। আপনি অল্প পরিমান আনারস খেতে পারেন।আনারস খাওয়ার ক্ষেত্রে সর্তকতা
আনারস যেখানে জন্মায় অর্থাৎ আনারস ক্ষেত্রে সাপের আবিভাব বেশি থাকে। এমতাবস্থায় আনার খাওয়ার সময় এটি খুব ভালভাবে পরিষ্কার করে তারপর কেটে খাওয়া উচিতউপসংহার
আনারস খুব উপকারি একটি রসালো ফল এবং এটি একটি মৌসুমি ফল। যা অত্যান্ত সুঘ্রান যুক্ত ও এর স্বাদ অনেকেরই মন কাড়ে খুব সহজে। আনারস বিভিন্ন রেসিপিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। আনারসের সময় বাজারে আনারসে পরিপূর্ণ থাকে এবং এর ঘ্রানে বাজারে গেলে যেন মন খুব সহজে আনন্দে ভরে উঠে।লেখকের মন্তব্য: আনারস খুব উপকারী একটি ফল। তার পরেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি খাওয়ার ব্যপারে সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরী। তাই আপনি যদি নিয়মিত এন্টিবায়োটিক, ঘুমের ঔষধ ও ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চলেন তাহলে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক আনারস খাওয়া প্রয়োজন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে আমাদের পেজকে ফলো করতে পারেন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url