পাইলসের লক্ষণ - পাইলস ভাল করার ঘরোয়া উপায়

আজ আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌছে গেছি যেখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রোগ এর সম্মুক্ষিন হচ্ছি। আজ আমি এমনই এক রোগের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যেটি আস্তে আস্তে ব্যপক আকার ধারন করা শুরু করেছে। আমাদের অনেকেরই ধারনা নাই পাইলসের লক্ষন সম্পর্কে। তাই আসুন এই পোস্টের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক পাইলসের লক্ষন সম্পর্কে।

 
পাইলসের লক্ষণ - পাইলস ভাল করার ঘরোয়া উপায়

আমরা বিভিন্ন ভাবে বুঝতে পারলেও পাইলস ভাল করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানি না। পাইলস মুলত এক ধরনের রোগ। কিন্তু অনেকে মলদারের ব্যথা মানেই পাইলস মনে করে আসলে ব্যপারটা তা নয়। তাহলে আসুন এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করি।

ভূমিকা

পাইলস মুলত মলদারের একধরনের রোগ। কিন্তু এ ধরনের রোগে মুলত প্রথম অবস্থায় তেমন কোন ব্যথা অনুভব করা যায় না। পাইল মুলত বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের মাঝে একধরনের প্রচলত হয়েগেছে যে মলদারে কোন ব্যথা হলেই পাইলস ভেবে বসে থাকি। তাই এর জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন কিছু চিন্তা ভাবনা করা যাবে না।
 
আরো পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ ও দুর্গন্ধ ভাল করার উপায়

পাইলস এর লক্ষন

এটি একটি কমন রোগ হলের বিভিন্ন পর্যায়ে এটি বিভিন্ন আকার ধারন করে। এই জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগন এ রোগকে চারটি স্টেপে ব্যখ্যা করে থাকেন। আসুন এ চারটি স্টেপ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

প্রথম লক্ষন

পাইলস এর প্রথম স্টেপ বা লক্ষন হলো মলদারের সময় তাজা লাল রক্ত বের হয়। কিন্তু এ সময় মলদারে কোন ব্যথা অনুভোব হয়না। মলত্যাগের সময় মলদারের কোষ বা কুশন ফেটে রক্ত বের হয়। ডাক্তারগন একে পাইলস এর প্রথম লক্ষন হিসাবে গণ্য করেছে।

দ্বিতীয় লক্ষন

মলদারের বাহিরে মলদার রগ বা কুশন বের হয়ে আসবে এবং পরবর্তীতে আবার নিজ নিজ থেকে ঢুকে যাবে। এরুপ অবস্থাকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ পাইলসের দ্বিতীয় লক্ষন হিসাবে গন্য করেছেন।
 
আরো পড়ুন: পেঁপেঁ পাতার উপকারিতা

তৃতীয় লক্ষন

মদলারের বাহির মলদার রগ বা কুশন বের হয়ে আসবে এবং নিজ নিজ আবার ভিতরে ঢুকে যাবেনা। এ অবস্থায় আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে ভিতরে ঢুকে যাবে এ অবস্থাকে পাইলসের তৃতীয় লক্ষন হিসেবে ধরা যায়।

চতুর্থ লক্ষন

এটি পাইলসের সর্বশেষ লক্ষন এ অবস্থায় মলদারের ভিতর থেকে যে খন্ডটি বাহিরে অবস্থান করবে তা আর ভিতরে প্রবেশ করানো যাবেনা এবং কোন কোন সময় খুব ব্যথা অনুভব হয়। এটি পাইলসের শেষ স্থোর। আর এ অবস্থায় আসলে আর দেরি করা যাবেনা দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

এ রোগের প্রকোপ কমাতে যা যা খাওয়া দরকার

আপনি প্রতিদিন ইশবমুলের ভূষি পানির সঙ্গে মিশিয়ে শরবত করে খেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন রাত্রে শুবার সময় এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকরুন। এছাড়া বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার ও আশযুক্ত খাবার খেতে পারেন। শাকসবজী বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পানি পর্যাপ্ত পরিমান পানি খেতে হবে। যে কোন অবস্থায় শরীরে পানির ঘারতি না দেখা দেয়।

ব্যথা অনুভব হলে ব্যথা নাশক প্যারাসিটামল খেতে পারেন। তবে বেশি ব্যথা বা যে কোন রোগের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। মনে রাখবেন মলদারের যে কোন ব্যথা পাইলস এর ব্যথা নাও হতে পারে তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে নিশ্চিত হয়ে ঔষধ সেবন করতে হবে।

অপারেশনের করার ক্ষেত্রে

অনেকে পাইলস হলে বিভিন্ন ভাবে অপারেশনকরার কথা চিন্তা করে। কেউ লেজার দিয়ে অপারেশনের কথা চিন্তা করে যেন ব্যথা না লাগে, কেউ মেশিনের দ্বারা অপারেশন করার কথা চিন্তা করে আবার কেউ কেটে অপারেশনের কথা চিন্তা করে। তবে মনে রাখবেন যে কোন অপারেশন ব্যথা নাশক হতে পারেনা। আবার সবার জন্য সব অপারেশন সুট নাও করতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অপারেশন করতে হবে।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে পাইলস নিরাময়ের পদ্ধতি

গরম পানিতে ব্যবহার

মলদারের দারে গরম পানির শেক নিতে পারেন। কিভাবে গরম পানির শেক নিবেন তা হলো একটি পাতে কিছুটা কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে বসে যাতে করে মলদার থেকে মাজা পর্যন্ত পানিতে থাকে। কুসুম গরম পানি মলদারের কুসনকে রিল্যাক্স করতে অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করে। দিনে ২-৩ বা করা যায়।

পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে না রাখা

পায়খানার চাপ আসলে তা বেশিক্ষন আটকে রাখবেন না। আপনি যদি মল আটকে রাখেন তাহলে মল শুকিয়ে যেতে থাকে। এক্ষেত্রে বাথরুম করতে অনেক কষ্ট হতে পারে।

পাযুপথ পরিষ্কার রাখতে হবে

পায়ুপথ শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখতে হবে। তা না হলে সেটি যদি ভেজা ও শ্যাসতসেতে থাকে তাহলে অনেক জিবানুর সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

জোরে চাপ না দেওয়া

অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় অনেকে বাথরুম করতে গিয়ে খুব জরে জরে চাপ দেয় এতে করে পায়ুপথ অনেক পেশার পায় যার ফলে পাইখার রগটি বাহিরে চলে আসে। তাই এ ধরনের চাপ বাথরুম করার সময় দেওয়া যাবেনা।

টয়লেটে বেশিক্ষন বসে না থাকা

অনেকে বাথরুমে গিয়ে মোবাইল টেপাটেপি করে এবং অনেক সময় ধরে বাথরুমে বসে থাকে। এতে করে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই বাথরুমে বেশিক্ষন বসে না থাকা থেকে বিরত থাকতে হবে।

পা উচু করে রাখা

বিছানায় শুয়ে থাকার সময় পায়ের দিকটা কিছুটা উচু করে শুয়ে থাকতে পারেন। এজন্য বিছানার পায়ের দিকে ডাবল করে বালিশ দিয়ে সুয়ে থাকতে হবে।

শারীরিক ব্যম

শারীরিক পরিশ্রম করা জরুরী এটি যেমন শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে তেমনি আপনাকে বিভিন্ন রোগ থেকেকেও বাঁচিয়ে থাকে। আপনি এক দিনে অনেক বেশি না করে আস্তে আস্তে এর পরিধি বাড়াতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত হাটা চলা করেন তাহলে এটি আপনার পাচনক্রিয়াকে হজম করতে সহায়তা করে।

উপসংহার

পাইলস একটি রোগ যেটি বর্তমানে ব্যপক আকার ধারন করে চলেছে। কিন্তু আমরা এ রোগকে ভয় না করে যদি দৈনন্দিন কাজকর্মগুলো সঠিকভাবে করে থাকি তাহলে আমাদের এ রোগ হওয়ার আশংকা অনেক কম থাকে। তাই আমরা ভয় না করে এর কোন লক্ষ্যন দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলতে পারি।

লেখকের মন্তব্য:
পাইলস রোগ যেটি খুব ব্যথা অনুভূত হয় না। আবার আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি লজ্জার কারনে আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করিনা বা করতে সংকোচ বোধ করি। তাই এই রোগ হলে আমরা সংকোচবোধ না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারি। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url