মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ - মুখের দুর্গন্ধ দুর করার উপায়

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আর সেটি হলো মুখে দুর্গন্ধ। যেটি আমরা বিভিন্ন সময় ফেস করে থাকি এবং অসস্তিতে পড়ি। কারো মুখে দুর্গন্ধ হলে অনেক ক্ষেত্রে সে বুঝতে না পারলেও তার সামনে বা পাশে ‍যিনি থাকেন সে কিন্তু অসস্তিতে পড়ে। তাই আমরা আজ জানবো মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ সম্পকে।

মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ - মুখের দুর্গন্ধ দুর করার উপায়

 
তাই প্রিয় পাঠক মুখে দুর্গন্ধ একটি বিরক্তিকর বিষয়। যার হয় তার কাছেও বিরক্ত লাগে আবার যার সাথে কথা বলে তার কাছেও এটি খুব বিরক্তির একটি বিষয়। তাই মুখের দুর্গন্ধ দুর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

ভূমিকা

মুখে দুর্গদ্ধ বিভিন্ন কারনে হতে পারে। অনেক সময় এটি আপনার শরীরের কোন অসুখের লক্ষ্যন হিসাবেও দেখা যায়। তাই মুখে দুর্গন্ধ কেন হয় ও কিভাবে মুখের দুর্গন্ধ দুরকতে পারবেন তার ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টটের মধ্যে।
 
আরো পড়ুন: কালোজিরা তেলের উপকারিতা

মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ

মুখে দুর্গন্ধ বিভিন্ন কারনে হতে পারে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পেটের সমস্যা

কারো যদি পেটের সমস্যা থাকে তাহলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। যেমন অম্বল অর্থাৎ এক ধরনের গন্ধযুক্ত টেকুস অনেক সময় উঠে এছাড়াও লিভারের কোন সমস্যা হলেও মুখে দুর্গন্ধ দেখা যায়।

মুখের লালা শুকালে বা শুকনো মুখ হলে

অনেকের মধ্যে দেখা যায় যাদের মুখে লালা ভাব কম বা থুথু কম হয় তাদের মুখে দুর্গন্ধ দেখা যায়। মুখের লালা যেমন খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে তেমনি এটি মুখের দুর্গন্ধ দুরকরতেও সহায়তা করে।

মুখে ইনফেকশান

কারো মুখে ইনফেকশান দেখা দিলে মুখ দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয়। যেমন কারো মুখে যদি ঘা হয় বা মাড়ি দিয়ে রক্ত ঝরে বা পুচ পড়ে সেক্ষেত্রেও কিন্তু মুখে দুর্গন্ধ দেখা যায়।

মুখে খাদ্যকণা জমে থাকার কারণ

আমরা অনেক সময় খাবারের পর মুখ কুলকুচি করিনা বা অনেকে ব্রাশ ঠিকমত করে না। এক্ষেত্রে মুখের মধ্যে দাতের ফাঁকে ফাঁকে খাদ্য কনা জমে থাকে। এই খাদ্যকণাগুলো পচে মুখে দুর্গন্ধ বের হওয়ার অন্যতম কারন।
 
আরো পড়ুন: মেথি খাওয়ার উপকারিতা

ফুসফুস সমস্যা

কারো ফুসফুসে সমস্যা হয়ে থাকলেও মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।

জিব্বা পরিষ্কার না করা

আমরা অনেক সময় ব্রাশ করলেও আমরা আমাদের জিব্বা পরিষ্কার করিনা। জিব্বার মধ্যে লক্ষ্য লক্ষ্য পশমের মধ্যে অনেক খাদ্য কনা জমে থাকে। এটিও মুখে দুর্গন্ধ বের হওয়ার একটি অন্যতম কারণ।

স্মোকিং

যারা অতিরিক্ত স্মোকিং করে বা নেশা জাতীয় খাবার খায় যেমন তামাক, জদ্দা জাতীয় খাবার খায় তাদের মুখ দিয়ে অনেক দুর্গন্ধ বের হয়।

মুখের দুর্গন্ধ দুর করার উপায়

মুখে সাধারণত বিভিন্ন কারনে দুর্গন্ধ বের হয়। আর এ অসস্তিকর দুর্গন্ধ দুর করার ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি রয়েছে। যেগুলো আপনি প্রযোগ করলে খুব সহজে মুধের দুর্গন্ধ দুর করতে পারবেন। আসুন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।

গরম পানি

কেউ যদি হালকা কুসুম গরম পানির মধ্যে লেবু চিপে মিক্স করে তা দিয়ে অথাৎ সেই লেবু মিশ্রিত পানি দিয়ে দিনে দুইবার গড় গড়াই এবং গড় গড়া শেষে খেয়ে নেয় তাহলে তার দুইটা উপকার হবে একটি মুখের দুর্গন্ধ দুর হবে এবং পেটের চর্বি গলে যাবে।

ঘরোয়া মসলা দ্বারা

ঘরে থাকার দারচিনি, পানি, এলাচ, তেজপাতা একসঙ্গে ফুটিয়ে তা যখন হালকা কুসুম কুসুম গরম অবস্থায় গড়গড় করে খেতে নিতে পারেন তাহলে যেমন মুখের দুর্গন্ধ দুর হবে তেমন আপনার সর্দির প্রকোপ থাকলেও তা দুর হয়ে যাবে।

লবঙ্গ

কেউ যদি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারে তাহলে তার মুখে দুর্গন্ধ থাকা অসম্ভব। যদি লবঙ্গ চিবিয়ে না খেতে পারেন তাহলে তা গরম পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মত করেও খেতে পারেন।

ব্রেকিং সোডা

ব্রেকিং সোডা পানিতে মিশিয়ে অথবা ব্রাশ করার সময় যদি ব্রেকিং সোডা মিশ্রিত করেত ব্রাশ করা যায় সে ক্ষেত্রের মুখের দুর্গন্ধ দুর করা সম্ভব।

পানি পান করা

মুখে দুর্গন্ধ থাকলে পর্যাপ্ত পরিমান বা কিছু সময় পর পর পানি পান করতে পারেন। এক্ষেত্রে মুখের মধ্যে পরিষ্কার থাকে এবং আপনার শরীরের পানির চাহিদাও পুরন হয়।

ডেন্টাল ফ্লস

আমরা ব্রাশ করার পরেও আমাদের দাতের ফাকে খাদ্য কনা থাকে যা পচে গিয়ে মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। তাই খাবারের পর দাতের ফাকে ফাকে যদি চিকন সুতা দিয়ে টানা যায় তাহলে এর মধ্যে থাকা খাদ্য কণাগুলো বের হয়ে যায়। আর একে ডাক্তারি ভাষায় ডেন্টাল ফ্লস বলা হয়।

খাবার খাওয়া

কেউ যদি পর্যাপ্ত পরিমান শোশা, চেয়ারা, আপেল এ যাতীয় খাবার খেতে পারে সেক্ষেত্রের তার মুখে দুর্গন্ধ থাকা প্রায় অসম্ভব।

মাউথ ওয়াশ

মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকলে মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও মাউথ স্প্রে পাওয়া যায় এগুলো মুখের জিবানুকে ধ্বংস করে মুখের দুর্গন্ধ দুর করতে সহায়তা করে।

জিব্বা পরিষ্কার

মাঝে মাঝে আপনি আপনার জিব্বকেও পরিষ্কার করতে পারেন। তাহলে এর মধ্যে লুকিয়ে থাকা খাদ্যকনাগুলো বের হয়ে যায় এবং মুখ পরিষ্কার থাকে।

স্কেল করা

আপনি অন্তত বছরে আপনার মুখকে স্কেল করাতে পারেন। তাহলেও মুখের দুর্গন্ধ দুর হবে এবং আপনার দাত থাকবে শক্ত পরিষ্কার।

ব্রাশ করা

নিয়মিত দিনে দুই বার ব্রাশ করতে হবে। অনেকেই আছে যারা শুধুমাত্র সকালে ব্রাশ করলেও রাত্রে খাবারের পরে ব্রাশ করতে অভ্যস্ত নয়। তাই দিনে দুইবার ব্রাশ করা জরুরী এবং প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর ব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক মুখের দুরগন্ধ একটি অতি কমন বিষয় হলেও এর মহাত্য কিন্তু অনেক বেশি। কারন মুখে দুর্গন্ধ হলে যেমন লোক সমাবে চলাফেলা কথা বলা উঠাবসা করা যেমন কষ্টকর তেমনি লজ্জার বিষয়ও। তাই কারো মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকলে উপরোক্ত নিয়মেও মুখের দুর্গন্ধ দুর করতে পারেন।

লেখকের মন্তব্য: আপনার মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকলে আপনি উক্ত বিষয়গুলো ফলো করতে পারেন। এতেও কোন কাজ না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং এ পোস্টটি উপকৃত হয়ে থাকলে অন্যকে জানার জন্য পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url