ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায়

ডায়বেটিস এটি এখন খুব বহুল প্রচলিত একটি রোগ। এই রোগ খুব দ্রুত বেড়ে চলছে শহর কিংবা গ্রামের মানুষের মাঝে। ডায়বেটিস হলে আমরা মনে করি আমাদের সব শেষ। কিন্তু এটি আসল কথা নয়। আমরা যদি ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখায় উপায় জেনে থাকি তাহলে এটি কোন সমস্যা নয়। সাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবো।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায়

ডায়বেটিস হলে সামান্য একটু সচেতনতাই পারে আপনাকে সুস্থ থাকতে। আর এ জন্য খাবারে নিয়ন্ত্রন হাটা চলা বিষয়ে একটু গুরুত্ব দিতে হবে।

ভূমিকা

ডায়বেটিস বর্তমানে এতটা প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হলো আমাদের অসচেতনতার কারণ। আমরা যদি শারীরিক পরিশ্রন নিয়মিত করে থাকি এবং খাবারে নিয়ন্ত্রন মেনে চলি তাহলে আমাদের ডায়বেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। কিন্তু আমরা তা না করে যা পাই তাই খাই এবং একটু পরিশ্রন না করে কিভাবে পরিশ্রম না করা যায় সেদিকে লক্ষ্য করি। তাই আমাদের ডায়বেটিস হয়ে গেলে অবশ্যই কিছু নিয়ম আছে যেগুলো মেনে চলা আবশ্যক।

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায়

কারো ডায়বেটিস হলে যতটুকু না ডায়বেটিসের জন্য শরীরে প্রভাব পড়ে তার থেকে অনেক বেশি আমরা চিন্তার কারনে ফেলে থাকি। তাই চিন্তা না করে আমরা কিভাবে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন করতে পারবো সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

ডাইবেটিস রুগীর খাবার

কারো ডাইবেটিস হয়ে থাকলে তাকে অবশ্যই খাবারের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। ডাইবেটিস রুগীর জন্য আঁশ জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরী। তাই রুটি, লাল ময়দার রুটি, ভুট্টা বা জব এ সকল উপাদান হলো আঁশ যুক্ত খাবার তাই ভাতের পরিবর্তে এ সকল খাবার খাওয়া জরুরী। তবে ভাত খাওয়ার জন্য সাদা চালের পরিবর্তে লাল চালের ভাত খেতে পারেন। এটিও একটি আঁশ যুক্ত খাবার।

আরো পড়ুন: আলসারের প্রাথমিক লক্ষ্যন ও সমাধান 

মাছ, মুরগি, দুধ, ডিম এগুলো একজন ডায়বেটিস রুগী অনায়াসে খেতে পারে তাতে কোন সমস্যা নাই। তবে একজন ডাইবেটিস রুগিকে অবশ্যই একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প পরিমান খাবার খেতে হবে কিন্তু ২-৩ ঘন্টা পর পর খেতে পারে। সকালে নাস্তা যা অবশ্যই ৯ টার পূর্বে খেতে হবে আবার দুপুরে খাবারের পূর্বে অর্থাৎ ১১ টা নাগাদ হালকা নাস্তা করতে পারে এবং দুপুরে খাবার খেতে হবে। রাত্রের খাবারের পূর্বে সন্ধ্যার আগে হাল খাবার খেতে পারেন। কারো যদি রাত্রের খাবার তাড়াতাড়ি খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে ঘুমানোর পূর্বে হাল খাবার খেতে পারেন।

আরো পড়ুন: পাইলস এর লক্ষ্যন ও ভাল করার উপায় 

গরুর মাংস, খাসির মাংস, ফাস্ট ফুড, ভাজা পোড়া ইত্যাদি খাওয়া থেকে যতটা সম্ভব অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। তবে শাকসবজি, খোসাসহ ফল, লাল চালের ভাত, খেজুর এগুলো নিঃসন্দেতে খেতে পারে তাতে কোন সমস্যা নাই। প্রতিদিনের যে খাবার খান প্লেটের মধ্যে তা ভাগ করে খেতে পারেন অথ্যা যে খাবারে আপনার পেট ভরে সে খাবার বা বেশি পরিমান খাবা না খেয়ে পেট ফাকা রেখে খাবার শেষ করুন।

ডায়বেটিস রুগী যে সকল ফল খেতে পারেন

একজন ডায়াবেটিস রুগী সব ধরনের ফল খেতে পারেন তাতে তেমন কোন সমস্যা নাই। তবে কিছু কিছু ফলের দিকে নজর রাখতে হবে।

যেগুলো মৌসুমি ফল সেগুলো খেতে পারে তবে যেগুলো অধিক মিষ্টি ফল সেগুলো খাওয়ার দিকে একটু সচেতন হতে হবে। মৌসুমি ফল যেগুলো গরম কালে হয় সেগুলো আম, কাঁঠাল এগুলো অধিক মিষ্টি তাই এগুলো খাওয়া যাবে তবে পরিমানে কম খেতে পারেন।

তবে পেয়ারা, বেদেনা, জাম, ‍কুল (বরই), জামরুল, শসা, তরমুজ (অল্প পরিমান) এগুলো খেলে কোন সমস্যা নাই।

ডায়বেটিস রুগী যে ফল খেতে পারবেনা

একজন ডায়বেটিস রুগি আপেল আম কলা, আঙ্গুর এ কল ফল খাওয়া থেকে সচেতন হওয়া বাঞ্চনিয়। তাই একজন ডায়বেটিস রুগিতে এদিকে নজর রাখতে হবে।

ডায়বেটিস রুগীর শরীর চর্চা

একজন ডায়বেটিস রুগীগে নিয়ম করে শরীরর চর্চা করতে হবে। তাকে সপ্তাহে অন্তত ৩৫০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। যে ভাবে পরিশ্রম করলে আপনার ফুসফুস, হৃদপিন্ড চাপ পায় যা আপনি নিজে নিজে বুঝতে পারে এরকম পরিশ্রম করতে হবে। এবং শরীরের ঘাম যেন বের হয় সেরকম পরিশ্রম করুন।

এর জন্য আপনাকে ওয়ান আপ করতে হবে প্রথমে। আপনি ওয়ান আপ করার পর হাটুন এবং অন্তত ৩-৫ কিলোমিটার হাটুন। হাটর সময় একটু জরে জরে হাটতে হবে যেন শরীর পেশার পায় । এবং কিছু সময় বিশ্রাম নিন। দৈনন্দিন এক নিয়মে আপনি কাজ করতে থাকুন।

ডায়বেটিস রুগী কি মিস্টি খেতে পারে

ডায়বেটিস রুগী অবশ্যই মিস্টি খেতে পারবেনা তবে। খুব বেশি ইচ্ছা করলে মিষ্টি ফল খেতে পারে অল্প পরিমান। এমন হতে পারে খাবারের পর খুব সামান্য পরিমান সন্দেস, দই খেতে পারেন।

ডায়বেটিস চেক করার মেশিন

আপনি প্রতিনিয়ত ডাক্তারের কাছে ডায়বেটিস চেক করার জন্য আর বিরক্ত হতে হবেনা। এখন আপনি নিজেই ঘরে বসে আপনার ডায়বেটিস নিয়ম করে চেক করতে পারেন। আর এজন্য একটি ডায়বেটিস পরিক্ষা করার বা চেক করার মেশিন ক্রয় করতে হবে যার নাম গ্লুকো মিটার।

ডায়বেটিস রুগীর হিডেন ক্যালরী যুক্ত খাবার

কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে একজন ডায়বেটিস রুগীর বিপদে পরতে পারেন। আর এ সকল খাবারকে হিডেন ক্যালরী যুক্ত খাবার বলা হয়। এ সকল খাবারের মধ্যে ক্যালরী লুকিয়ে থাকে। এ সকল খাবারের মধ্যে রয়েছে কেক, সফট্ ডিংস, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি। এগুলোকে হিডেন ক্যালরী যুক্ত খাবার বলা হয়। ডায়বেটিস আক্রান্ত রুগীকে এ সকল খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।

উপসংহার

ডায়বেটিস হলে ভয় নয় কিছু নিয়ম ও অভ্যাস গড়ে তুলুন তাহলেই আপনিও সাভাবিক জীবন যাপন করতে পারনে কোন অসুবিধা নাই। এবং ডায়বেটিস হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হলে ঔষধ খেতে হবে এবং নিয়মিত ডাইবেটিস চেক করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য:
এই পোস্টের মাধ্যমে একজন ডায়বেটিস রুগী কিভাবে তা নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবে সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন তবে ডায়বেটিস হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url