আলসারের প্রাথমিক লক্ষন ও সমাধান করার উপায়
আজ আমরা এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো আর সেটি হলো আলসা। আমরা ব্যস্ত জীবনে কখন কোথায় খাচ্ছি কি খাচ্ছি, কখন খাচ্ছি এ দিকে আমাদের কারো নজর দেওয়ার কথা মনে করিনা। এজন্য আমরাই আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের মধ্যে আলসার একটি। তাই আসুন আলসারের প্রাথমিক লক্ষন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।
আলসার হলে মুলত বুক জ্বালাপোড়া, পেট ফাপা, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের লক্ষ্যন দেখা যায়। তাই আসুন আমরা আলসার সমাধান করার উপায় সম্পর্কেও জেনে নিয়।
আরো পড়ুন: পাইলস এর লক্ষন
ভূমিকা
আলসার মুলত গ্যাসটিকের একটি অংশ তবে সব গ্যাসটিকই আসলাস হতে পারেনা। আলসার হলে অসজ্য বুক ব্যথা ওজন কমে যাওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের লক্ষন আমাদের দেখায় যায়। এই আলসার মুলত খাদ্যভাস, অনিয়মিত খাবার খাওয়া সহ পাকস্থলির সমস্যার কারনে হয়ে থাকে। আলসার হলে সুয়ে বসে কোন শান্তি পাওয়া যায়না এমনকি ঘুমাতেও সমস্যা হয়।আলসারের লক্ষন
আসুন আমরা যে সকল সমস্যা দেখলে আলসারের লক্ষন হিসেবে ধরে নিতে পানি তা নিয়ে আলোচনা করি।আরো পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়
বুক জালাপোড়া করা
বুক অত্যধিক জালাপোড়া করা আলসারের একটি অন্যতম কারন হতে পারে। এর সঙ্গে টেকুস উঠা তো রয়েছে।অস্বাভাবিক পেট ব্যথা করা
যখন দেখবেন পেটের মধ্যে অস্বাভাবিক ব্যথা অনুভবে হচ্ছে তাহলে ধরে নিতে পারেন এটিও আলসারের এক প্রকার লক্ষ্যন। এটি পেট থেকে বুকের দিকে বেশি হয়ে থাকে।পেট ফাপা ও বায়ু ত্যগ করা
আলসারের কারনে পেটফাটা ও ঘন ঘন বায়ু ত্যগ হয়ে থাকে। কারো যদি দেখেন অতিরিক্ত পেট ফাপা ও বায়ু ত্যগ হচ্ছে তাহলে মনে করতে পারেন এটিও আলসারের একটি লক্ষন।বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
অনেক সময় মনে হতে পারে যে বমি বমি লাগছে বা কোন কোন সময় বহি হচ্ছে তাহলেও এটি আলসারের একটি কারণ হতে পারেন।রক্ত বমি হওয়া
কখন যদি দেখেন কারো বমির সাথে রক্ত যাচ্ছে তাহলে এটি আলসারের একটি লক্ষন। তবে এ রক্ত তাজা রক্ত না এটি মুলত বমির সাথে মিশে হালকা কালচে লাল বর্নের হতে পারে।টয়লেট ব্যবহারের সময় রক্তপাত
খাবার খাওয়ার ফলে পাকস্থলির কোন সমস্যা হয়ে থাকলে বা আলসারের সমস্যা হয়ে থাকলে পায়খানার সাথে অনেক সময় রক্ত যেতে দেখা যায়।খাবারে অরুচি
যদি লক্ষ করে নিয়মিত আপনার খাবারে অরুচি বোধ মনে হচ্ছে এবং যে কোন খাবার খেতে ইচ্ছা করছে না তাহলে এটিও এক প্রকার আলসারের লক্ষন।খাবার খেলে বুক জলা
আপনি যদি যে কোন খাবার খাওয়ার পরলক্ষ করে আপনার বুক জ্বালা পোড়া করছে তাহলে বুঝে নিতে হবে এটি আলসারের সমস্যা থেকে হচ্ছে।ওজন কমে যাওয়া
অসাভাবিক ভাবে কারো ওজন যদি কমে যায় তাহলে বুঝতে হতে এটি আলসারের সমস্যা। কারণ পেটের মধ্যে গ্যাস জমা হয়ে আপনার ওজন কমাতেও এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে।দুর্গন্ধ যুক্ত ঢেকুর আসা
যদি লক্ষ করে মাঝে মাঝে খুব বিশ্রি গন্ধযুক্ত ঢেকুর আসে এবং এটি প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে তাহলে এটিও এলসারের লক্ষন হতে পারে।আলসার হলে কি কি খাবার খাবেন
কারো যদি আলসার হয়ে থাকে তাহলে পাকা কলা, পাকো পেঁপেঁ খেতে হবে। কারন এটি আলসারের জন্য একটি বিশেষ উপযোগী খাবার। এছাড়াও ইসব মুলের ভূসি খেতে পারেন একটি এক ধরনের পিচ্ছিল ও গুনাগুন সম্পর্ন খাবার। নারিকেল দুধ ও আলসারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার এটি সকালে খালি পেটে ২ চামচ খেতে হবে। বাধাকপি প্রতিদিন দুপুরে সেদ্ধ করে রান্না করে খাবারের সাথে খেতে পারে।আসলার হলে কি কি যাওয়া যাবেনা
আলসার হলে মুলত মাংস ও ময়দা যাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা। এছাড়াও ভাজাপোড়া, দুধ ও দুর্ধ যাত খাবার এরিয়ে চলতে হবে এবং টক জাতীয় খাবার ও অতিরিক্ত মসলা যুক্ত খাবার ও ঝাল খাওয়া যাবেনা।সমাধান
আলসার বা গ্যাসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা এ জন্য অনেকে অনেক কিছু খেতে চাইনা কারণ যার আলসার রয়েছে একমাত্র সেই জানে আলসানের ব্যথা ও সমস্যার ফল। তাই আসুল এ থেকে কিছুটি মুক্তি পাওয়া ও বাড়তে না দেওয়ার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি।খাবার কম খাওয়া
কেউ যদি অতিরিক্ত খাবার বা পেট ভর্তি করে খেয়ে থাকে তাহলে গ্যাসটিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অনেকগুন। কারন অতিরিক্ত খাবাও খাওয়ার পলে পাকস্থলি পরিপূর্ণ থাকে যার ফলে গ্যাসটিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।খাবারের সময় ঠিক রাখা
এ থেকে বাচতে সঠিক সময় নিয়মিত খাবার খাওয়া। খাবারের অনিয়মিতর কারনেও আলসার বা গ্যাসটিকের সমস্যা দেখা যায়। তাই নিয়মিত সঠিক সময় খাবার খেতে হবে।গ্যাসযুক্ত খাবার এরিয়ে চলা
যে সকল খাবারে গ্যাস হয় গ্যাসের সমস্যা হয় সে সকল খাবার আমরা মুলত সবারই জানা। তাই এ ধরনের খাবার পরিহার করার চেষ্টা করতে হবে।দ্রুত রাতের খাবার খাওয়া
গ্যাসটিকের সমস্যা সমাধানের ও এ থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া উচিত। ধরুন কেউ যদি রাতের খাবার খেয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ঘুমাতে যায় তাহলে খাদ্যভর্তি পাকস্থলি উপরের দিকে ঠেলে আসে অথ্যাৎ গলার দিকে ঠেলে আসে এতে করে গ্যাসটিক বা আলসারের সমস্যা বাড়ে।তাই খাবারের পর অন্তত ২ ঘন্টা বিছানাতে না যাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আবার খেতে ইচ্ছা হলে খাবেন না।ঘুমানের সময় মাথা উচুতে রাখা
কেউ যদি ঘুমানোর সময় বডি অপেক্ষা মাথা নিচের দিকে দিয়ে ঘুমায় তাহলে গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই ঘুমানোর সময় অবশ্যই পিঠ অথবা মাঝা অপেক্ষা বাশা ১০ সেন্টিমিটার উচুতে রেখে ঘুমাতে বে।ওজন কমানো
যদি কারো ওজন অসাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে তার জন্য ওজন কমানো অতি জরুরী। তাই লক্ষ রাখতে হতে ওজন যাতে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি না পায় সেদিকে।ধুমপান বন্ধ করা
ধুমপান বা মদ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা দ্রুত পরিহার করা উচিত। কারণ অনেক ক্ষেত্রে ধুমপান ও মদ পান আলসার, ক্যান্সার এর জন্য মারাক্তক হুমকি স্বরুপ।যখন ডাক্তারের কাছে দ্রুত যেতে হবে
যদি লক্ষ করেন ওজন দ্রুত কমে যাচ্ছে , খাবার খাওয়ার সময় আটকে যাচ্ছে, বমি বমি মনে হচ্ছে, বমি ও পাইখার সাথে রক্ত যাচ্ছে, পেটের মধ্যে চাকার মত কিছু একটা মনে হচ্ছে বা আয়রনের সমস্যা। এ ধরনের সমস্যা যদি প্রায় হয়ে থাকে এবং ৩ সপ্তাহ বা এর বেশি সময় ধরে হয়ে থাকে তাহলে কোন প্রকার বিরম্বনা না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।উপসংহার
আলসার হলে আমাদের বুকের মধ্যে তিব্র জালাপোড়া করে এতে করে আমরা না পারি খেতে না পারি বসতে এমনকি ঘুমাতেও এটি ব্যপক বাধা সৃস্টি করে। তাই আলসারকে হেও পতিপন্ন না করে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খেতে হবে।লেখকের মন্তব্য: কোন অবস্থায় আলসার হলে নিজে নিজে কোন কিছু করতে যাবেন না। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খেতে হবে। কারন যে ঔষধ আপনি খেতে চাচ্ছেন সেটি আপনার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। তাই অতি শিগ্রই ডাক্তারের কাছে যাবেন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url