ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা

মানুষ বেচে থাকার জন্য কত কিছুই না করে। নিজের শরীরের ভালো রাখার জন্য যেমন ঔষধ খায়, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকার জন্য কত প্রসাধনী ব্যবহার করে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমরা কি জানি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা। ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকারে এর গুরুত্ব অপরীসিম।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা


ভিটামিন ই শরীরের ত্বক, চুল, নখ ইত্যাদি ভালো রাখার পাশাপাশি এটি শরীরেরও ভিবিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান ধ্বংস করে শরীর রাখে সুস্থ ও স্বাস্থকর।

ভূমিকা

ভিটামিন ই ক্যাপসুল সাধারণত বাজারের বিভিন্ন দোকানে ও ফার্মেসিতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন রং এর হয়ে থাকে ই ক্যাপসুলগুলো। এটি সাধারণত পানির সাথে সাধারণ ঔষধের মতো খাওয়া যায় এমনকি শরীরের উপরিভাগেও এটি ব্যবহার করা যায়। 

আরো পড়ুন: মন ভাল করার উপায়

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর পরিচিতি

ভিটামিন ই ক্যাপসুলকে সারণত দুটি নামে ডাকা হয়। যেমন এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ও এন্টি এজিং ভিটামিন। আজ আমি ভিটামিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

এন্টিঅক্সিডেন্ট বলার কারণ

আমাদের শরীরে মুলত তিন ধরনের ভিটামিন কাজ করে থাকে। তা হলো ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। ভিটামিন ই যে কাজগুলো করে তা হলো আমাদের শরীরে যখন মেটাবলিজম হয় তখন কিছু ফ্রি রেডিকেল তৈরি হয়। আর এ ফ্রি রেডিকেল আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। 

আরো পড়ুন: কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

যে ক্ষতি করতে পারে তা হলো আমাদের সেলগুলো ডেমেজ করে সেলগুলোকে অনেক বেশি বয়স্ক মনে করে যাতে করে আমাদের কপালের চামড়াগুলো কুচরে যায়, চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে, স্কিনের উজ্জলতা কমিয়ে দিতে পারে এছাড়াও আমাদের হার্ড এ্যাটাক করতে পারে, এমনকি ক্যান্সার সহ শরীরের বিভিন্ন জটিল রোগ সৃষ্টি করতে পারে এ ফ্রি রেডিকেলগুলো। আর এ সমস্ত ফ্রি রেডিকেলগুলোকে শরীর থেকে দুর করে দিতে সহায়তা করে ভিটামিন ই।

এন্টি এজিং বলার কারণ

বয়স বাড়ার কারনে আমাদের শরীরের ত্বকের গ্লো ভাব কমে যায়, চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে, কপালে ভাজ পড়ে কারণে তার শরীরে যদি ভিটামিন ই এর অভাব পড়ে তাহলে। ভিটামিন ই এর অভাবে কম বয়সেও মনে হবে তার অনেক বয়স্ক। এমতাবস্থায় যার শরীরের পর্যাপ্ত পরিমান ভিটামিন ই থাকে তাহেল তার বয়স সহজে বুঝা যায়না। এ জন্য একে এন্টি এজিং ভিটামিন বলা হয়।

প্রতিদিন আমাদের কি পরিমান ভিটামিন ই প্রয়োজন

এবার জানা যাক আমাদের শরীরে প্রতিদিন কি পরিমান ভিটামিন ই প্রয়োজন। আমাদের প্রতিদিন ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই প্রয়োজন। ভিটামিন ই সাধারণত লিপিড সলিবুল ভিটামিন। বিধায় এটি রাতে খাবারের পরে খাওয়া সবথেকে উত্তম।

ভিটামিন ই এর কার্যক্রমসমূহ

ভিটামিন ই সাধারণত এন্টি অক্সিডেন্ট ও এন্টি এজিং হিসাবে কাজ করে যা  পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। যা আমাদের সেলের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে সতেজতা বৃদ্ধি করে, চুলের গ্লো ও চুল মোটা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও শরীরের অনেক উপকার করে। ভিটামিন ই এর ঘারতি হলে আপনার শরীরর দুর্বল হবে, কাজ করতে ভালো লাগবেনা।

যে খাবারে ভিটামিন ই পাওয়া যায়

ভিটামিন ই পাওয়ার সবথেকে ভালো উৎস হলো যে কোন ধরনের বাদাম, পালং শাক, পুই শাক, সবুজ শাকসবজি, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, সূর্যমুখী বীজ, ব্রকলী, এ্যামন্ড ওয়েল এ ভিটামিন ই পাওয়া যায়। এছাড়াও লিভার বা কলিজাতে সব থেকে বেশি পরিমান ভিটামিন ই পাওয়া যায়।

আমরা যদি প্রতিদিন এ ধরনের খাবার খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের ভিটামিন ই ডেফিসিযেন্সি হবে না। যদি কারো ভিটামিন ই  ডেফিসিয়েন্সি হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক যে কোন দোকান থেকে না কিনে ফার্মেসী থেকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনে খেতে পারেন।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুলত ২০০ ও ৪০০ মিলিগ্রাম হয়ে থাকে তাই অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে আপনার শরীরে কি পরিমান ভিটামিন ই ঘারতি রয়েছে তা সেবন করবেন।

ভিটামিন ই কখন খাবেন না

আপনি যদি রক্ত পাতলা করার ঔষধ খেয়ে থাকে তাহলে এ ধরনের সাপলিমেন্ট খাবেন না। তা না হলে স্টোক হওয়ার মত সমস্যা হতে পারে। তবে যে কোন সময় খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক খাবেন।

যৌবন ধরে রাখতে ভিটামিন  ই

ভিটামিন  ই শরীরের বিভিন্ন কোষগুলো ডেমেজ হতে বাধা দেয়। তাই আপনার শরীর বয়স বৃদ্ধির ফলে যে বয়স্ক ভাব চলে আসে তা ভিটামিন ই আপনার ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলতে বাধা দেয়। এতে করে আপনার শরীর অনেক বয়স হয়ে গেলেও নষ্ট হয়না এমতাবস্থায় আপনার যৌবন ধরে রাখে এই ভিটামিন ই। কিন্তু আপনি নিজে নিজে ভিটামিন ই ক্যাপসুল সাপলিমেন্ট হিসাবে খাবেন না। অবশ্যই ডাক্তারের পরার্শ নিয়ে তার পর খাবেন।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল কোনটি খাবেন

বিভিন্ন ফার্মেসীতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। মুলত দুই রংয়ের ক্যাপসুল পাওয়া যায় তা হলো সবুজ ও কমলা রংয়ের। যে কোন টিই খেলে হবে। এর মধ্যে মুলত পার্থক্য হলো এমজি এর। একটি ২০০ এমজি ও আরেকটি ৪০০  এমজি। ধরুন আপনার জ্বর হলে আপনি নাপা খেয়ে থাকে এতে কাজ না হলো ডোজ বৃদ্ধি করে নাপা এক্সটা খেয়ে থাকেন। এটিও মুলত তাই। তবে চেষ্টা করবে কমলা কালালের খাওয়া। 

শরীরের ব্যবহার করবেন যেভাবে

যাদের শরীরের ত্বক শুষ্ক বা অতিরিক্ত তৈলাক্ত স্কিন তারা মুলত সবুজ রংএর টা স্কিনে ব্যবহার করবেন। যারা সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন না তারা এ্যালোভেরা জেলের সাথে ভিটামিন এ ক্যাপসুল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। স্কিনে ব্যবহার করার সময় তা ত্বকে ২০-৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে তা হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে হবে।

চুলের যত্নে ভিটামিন ই

অনেক সময় ভিটামিন ই এর অভাবে চুল পড়ে যায়। তাই আমাদের ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবারগুলো খেতে হবে। তাই আগেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল না খেয়ে আগে আমাদের ভিটামিন ই যুক্ত ভাবারগুলো খেতে হবে। অনেকে চুল পড়া রোধ করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকেন।  

আরো পড়ুন: প্রাকৃতিক উপায়ে যৌবন ধরে রাখার উপায়

চুলের যত্নে চারিকেল তেলের বিকল্প নাই। চুলে ব্যবহারের জন্য নারিকেল তেলের সাথে প্রয়োজন মত অথ্যাৎ যাতের চুল বেশি তারা ১০ টি ও যাদের মাঝারি সাইজের চুল তারা ৫-৬ টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিবেন এবং চুলে ব্যবহার করবেন। এর সঙ্গে যদি লেবুর রস নিয়ে থাকেন তাহলে খুব ভালো হয়।

আপনার মাথায় খুশকি থাকলে উক্ত মিক্স করা তেল ব্যবহার করতে পারলে আপনার মাথার খুশকি ভালো হবে বলে আশা করা যায়।

আপনি চাইলে এ্যালোভেরা চেছে তার জেল, লেবু এর সাথে ভিটামিন  ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি অনেকে অনেক ভাবে ব্যবহার করে থাকেন। আপনি যদি উক্ত নিয়মে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকে তাহলে আপনার চুলপড়া, চুলের আগা ফাটা, শুষ্কতা ভাব ইত্যাদি দুর হবে।

উপসংহার

ভিটামিন ই আামদের শরীরের বিভিন্ন উপকার বয়ে আনে। এটি বিভিন্ন খাদ্যের মধ্যে পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যে কোন ফার্মেসীতে পাওয়া ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবহার করলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে।

লেখকের মন্তব্য: উক্ত বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই আপনি অযথা নিজ মন গড়া কোন কিছু করতে যাবেন না। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক তা ব্যবহার করবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url