কেন পা কামড়ায় - পা কামড়ানো দুর করার উপায়
প্রিয় পাঠক আশা করি ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। বিষয়টি হলো কেন পা কামড়ায়? পা কামড়ানো মোটামুটি প্রায় সকলের হয়ে থাকে। কারো কম বা কারো বেশি। মহিলাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু বেশি দেখা যায়।
এ ধরনের সমস্যা বিশেষ করে রাত্রে বেশি হয়ে থাকে। পা কামড়ানোর ফলে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। অনেক সময় অতিরিক্ত পা কামড়ালে অনেকে কান্না করে থাকে। উক্ত সমস্যা শশুদের ক্ষেত্রের একই প্রভাব ফেলে। পা কামড়ানো দুর করার উপায় সম্পর্কে জানতে এই পোষ্টটি দুরুত্ব সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
পা কামড়ানো কোন নতুন সমস্যা নয়। শহর থেকে গ্রাম সকল স্থানের মানুষেরা উক্ত সমস্যার সম্মুখিন হয়ে থাকেন। অতিরিক্ত পা কামড়ানোর জন্য অনেকে আবার দড়ি বা গামছা দিয়ে তাদের পা চেপে বেন্ধে রাখেন। এটি একটি অসর্জনীয় যন্ত্রনা। যার ফলে কোন কাজে মন বসেনা এমনকি ঘুমেরও ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তাই আসুন কেন পা কামড়ায় সে সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।আরো পড়ুন: হাত পা ফর্সা করার কার্যকরী পদ্ধতী
কেন পা কামড়ায়
সাধারণত পা বিভিন্ন কারনে কামড়াতে পারে। নিম্নে বিভিন্ন কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।আরো পড়ুন: শিশুর পুষ্টিকর খাবারের তালিকা
আরো পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ ৩০ টি সুন্নতক্যালশিয়াম এর অভাবে
সাধারণত ক্যালশিয়ামের অভাব হলে পা কামড়িয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক সঠিক নিয়মে ক্যালশিয়ামের ঔষধ খেতে হবে। এছাড়াও আপনাকে নিয়মিত ক্যালশিয়াম যুক্ত খাবার খেতে হবে। তাহলেই ক্যালশিয়ামের ঘরতি পুরন হলে পা কামড়ানো দুর হতে পারে।ভিটামিন ডি
অনেক সময় শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘারতি হলে পা কামড়াতে পারে। অনেকে মনে মনে শুধুমাত্র ক্যালশিয়ামের অভাবে পা কামড়ায় কথাটি কিন্তু সম্পূর্ণ সত্য নয়। পা কামড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক আংশে ভিটামিন ডি এর অভাব দায়ী। বিধায় আপনাকে অন্তত মাসে একবার হলেও ভিটামিন ডি শরীরে নেওয়া প্রয়োজন। আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এল অভাব থাকলে যতই ক্যালশিয়াম ঔষধ খান কাজ হবেনা।আয়রন এর অভাব
শরীরে আয়রনের অভাব হয়ে থাকলে পা কামড়াতে পারে। রক্তে প্রয়োজনের তুলনায় আয়রন কম হলে সাধারণত এধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে আয়রনের অভাব বেশি হয়ে থাকে। কারন পিরিয়ডে মেয়ের অনেক রক্ত বের হয়ে যাওয়ার কারনে শরীরে রক্ত কমে যায় এবং রক্তে আয়রনের মাত্রা কমে যায়। এমতাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক নিয়মিত আয়রন এর ঔষধ ও আয়রন যুক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন।ভিটামিন বি এর অভাব
ভিটামিন বি এর অভাবেও পা কামড়াতে পারে। তাই আপনাকে ভিটামিন বি যুক্ত খাবার ও ঔষধ নিয়ম অনুযাসে খাওয়া জরুরী।গর্ভাবস্থায়
মেয়েদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় পা কামড়াতে পারে। এ সময় শরীরে আয়রনের ও ভিটামিন বি এর বিশেষ প্রয়োজন হয়ে থাকে। উক্ত সময় গর্ভে থাকা বাচ্চা বড় হতে তাকে যার যোগান দেওয়ার জন্য আয়রত ও ভিটামিন শরীরে কমে গেলে পা কামড়াতে পারে। এমতাবস্থায় উক্ত খাবরের নিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।পানি কম খাওয়া
পানি কম খাওয়ার কারনেও পা কামড়াতে পারে। এমতাবস্থায় আপনাকে প্রচুর পানি পান করতে হবে। পা কামড়ানোতে ডিহাইড্রেশন বিশেষ ভাবে দায়ী। পানি স্বল্পতা কারনে বেশিরভাগ মহিলাদের পা কাড়িয়ে থাকে। কারন মহিলারা বেশি পানি খেতে চায় বিশেষ করে বাহিরে যাওয়ার সময় ব্যবহার উপযোগী টয়লেট সমস্যা কারনে। সেক্ষেত্রে রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার সময় পর্যান্ত পরিমান পানি পান করুন।অতিরিক্ত সময় দাড়িয়ে থাকার কারনে
আমাদের অনেকের অতিরিক্ত সময় দাড়িয়ে থেকে বিভিন্ন কাজ করতে হয়। এতে করে অনেক সময় পা কামড়িয়ে থাকে। যেমন একজন শিক্ষক, বা কোন কলকারখানার কর্মরত শ্রমিক যাদের ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে কিচুক্ষন পর পর একটু বসতে হবে এ সব সময় দুই পায়ের উপর সমান ভর না দিয়ে এক পায়ে ভর দিয়ে দাড়িয়ে থাকতে হবে।বেশি হাটা চলার কারনে
অনেক সময় বেশি হাটা চলার কারনে পা কামড়িয়ে থাকে। যেমন কোন কোম্পানির কর্মরত কর্মী হেটে হেটে মার্কেট করার কারনে পা কামড়াতে পারে।ঘুম কম হওয়ার ফলে
অনেক সময় দেখা যায় প্রয়োজনের তুলনায় কম মাত্রায় ঘুমানোর ফলে পা কামড়িয়ে থাকে।CKD
এটি একটি কিডনি জনিত রোগ। কেউ যদি এ রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে প্রথমে ঠিক বুঝা যায়না তবে এটি একটি মারাত্মক রোগ। যা কিডনিকে অচল করে দিতে পারে।পারকিনসস ডিজিস
এ রোগ সাধারণত বয়স্ক মানুষের বেশি হয়ে থাকে। এ রোগটি সাধারণত হাত চেড়ে শূণে ধরে রাখলে দেখবে অটমেটিক হাত কাঁপথে থাকে বা অবেশ মনে হয়। সাধারণত এ রোগকে পাকিনসস ডিজিস বলে। এর প্রভাবেও পা কামড়াতে পারে।পা কামড়ানো দুর করার উপায়
কুমড়া বীজ
কুমড়া বীজে রয়েছে ভিটামিন ই, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার পা কামড়ানো দুর করে খুব অল্প সময় ঘুমাতে সাহায্য করে। এ জন্য কুমড়া বীজ ভালো করে রোদে শুকিয়ে প্রতি রাতে ৬-৭ টি বীজ গরম দুধ বা পানির সঙ্গে খেতে হবে।ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি আপনার শরীরে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গ্রহণ করতে হতে।পানি
সারাদিন প্রচুর পরিমান পানি পান করতে হবে। এছাড়া যারা দিনে খেতে পারেনা বিভিন্ন কারনে তারা অবশ্যই সন্ধ্যার পর বেশি পরিমান পানি পান করুন। বিশেষ করে রাত্রে খাবারের পর হতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত পানি পান করুন।ঘুম
ঘুমের দিকে নজর দিতে হতে। সঠিক মাত্রায় ঘুমাতে হবে। কারন শুধু পা কামড়ানো না শরীরের অন্যান্য দিক সুস্থ্য রাখার জন্য ঘুমাতে হবে।ক্যালশিয়াম
ক্যালশিয়াম ট্যাবলেট ও ক্যালশিয়ায় যুক্ত খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় রাখ হতে।ব্যায়াম
শারীরিক ব্যায়ের কোন জুড়ি নাই। নিয়মিত ব্যায়াম যে ব্যক্তি করে থাকে তার শরীর হতে ৮০ শতাংশ অসুখ দুরে থাকে। এমতাবস্থায় আপনাকে সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করতে হবে।বিভিন্ন ফল
বিভিন্ন ধরনের ফল নিয়মিত খেতে পারেন। যেমন পেয়ারা, আঙ্গুর, আপেল, ডাবের পানি ইত্যাদি।উপসংহার
পা কামড়ানো সমস্যা সাধারণত শহর থেকে গ্রাম এমনকি ছোট বাচ্চা হতে বৃদ্ধ পর্যন্ত সময় স্তরের মানুষের হয়ে থাকে। এমন হয়ে থাকে যে জন্মের সময় কোন বাচ্চা এ সমস্যা সঙ্গে নিয়ে জন্ম গ্রহণ করছে। কারণ এখন অনেক পিতা-মাতার এ সমস্যা রয়েছে। তাই আমাদের এদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।লেখকের মন্তব্যঃ প্রিয় পাঠক পা কামড়ানো খুব ছোট সমস্যা মনে হলেও আসলে এটি খুব ছোট সমস্যা নয়। এটি রাত্রে আপনার ঘুম নষ্ট করার জন্য জথেষ্ট। তাই প্রথমে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ্য জীবন যাপন করুন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url