আম গাছে প্রচুর মুকুল আনার উপায় - আম গাছের মুকুল ঝরা রোধ করার উপায়
আম আমাদের দেশের একটি উল্লেযোগ্য ফল। আমগাছ সারা দেশে দেখা যায়। অনেকে আবার এ গাছছে ভালবেসে বাসার ছাদেও লাগিয়ে রাখেন। আরা এ গাছকে ভালবেসে রোপন করি কিন্তু এর সঠিক পরিচর্যা সকলে জানিনা। তাই আসুন আজ এ পোস্টের মাধ্যমে আম গাছের সঠিক পরিচর্যা ও কিভাবে আম গাছে প্রচুর মুকুল আনার উপায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।
আম গাছ আমাদের সকলের একটি প্রিয় গাছগুলো মধ্যে একটি। তাই আমরা অনেকে এর বাগান করে থাকি এছাড়াও অনেকে ভালবেসে ছাদ বাগান তৈরি করি। আমাদের মাঝে একটি প্রশ্ন থাকে আম গাছে মুকুল আসলেও ঝরে যায়। তাই এ পোস্ট থেকেও জানতে পারবেন কিভাবে আম গাছের মুকুল ঝরা রোধ করার উপায় আছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।
ভূমিকা
আমগাছ আমরা অনেকে বানিজ্যিক আকারে মৌসুমি ফসল হিসাবে চাষাবাদ করি। কিন্তু সঠিক সময় সঠিক পরিচর্যা না করার ফলে আশানারুপ ফল থেকে বঞ্চিত হয়। তাই আমাদের সঠিক নিয়মে আমগাছের পরিচর্যা করাবাধ্যতামূলক। তাই আসুন কিভাবে আমগাছের পরিচর্যা করা যায় আলোচনা করি।
আম গাছে প্রচুর মুকুল আনার উপায়
কিছু কিছু আমগাছে ডিসেম্বরের শেষের দিকে মুকুল দেখা দেয়। এছাড়াও জানুয়ারীর মাঝামাঝি থেকে অনেক গাছে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুকুল আসতে থাকে। তাই গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের পরিচর্যা করতে হবে। এ সময় কোন অবস্থাতে গাছের ডালপালা ছাটা যাবেনা এবং গাছকে প্রচুর খাদ্য প্রদান করা যাবেনা।
আরো পড়ুন: সারা বছর টমেটো খাওয়ার উপায়
প্রচুর খাদ্য প্রদান করা হলে গাছের নতুন কুশি জন্মাতে পারে একে করে গাছে কম পরিমান মুকুল আসে। এছাড়াও শীত কাল প্রচুর ধুলাবালী এর সঙ্গে কুয়াশার প্রকোপ থাকে অনেক বেশি তাই গাছের কুশি বের হওয়ার স্থানে একটি আবরনের সৃষ্টি হয় এতে করে মুকুল বের হওয়ার পথ বাধাগ্রস্থ হয়। তাই যদি সম্ভব হয় তাহলে প্রতিদিন বিকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে প্রেসারের সাথে গাছ ধুয়ে দিতে হবে। এছাড়াও হাইড্রোনপার অক্সাইড মিশ্রিত করেও গাছ ধুয়ে দিতে পারেন।
কিন্তু অধিক মুকুল আনার জন্য বাজার থেকে ভাল কোম্পানির ঔষধ নিতে পারেন যার মধ্যে নাইট্রোজেন ০%, ফসফরাস ৫% এবং পটাশ ৩৪% বা এর থেকে কম না থাকে এমন ঔষধ নিয়ে প্রতি লিটারে ১ চামচ ঔষধ মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
আরো পড়ুন: আলু চাষের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি
ফসফরাজ কেন জরুরী তা হলো শীতকালে গাছ অনেক রুক্ষ খুষ্ক হয়ে পড়ে এবং গাছ শুষম খাদ্য গ্রহণ করতে পারেনা। তাই এই সময় আপনি যদি গাছে ফসফরাস দিয়ে থাকেন তাহলে গাছের শিকড় অধিক পরিমান হয়ে থাকে এবং গাছের শিকড় মজবুত হয়। এর ফলে গাছ খাদ্য গ্রহন করতে পারে অনেক পরিমান। তাই এ সময় গাছের জন্য কমপক্ষে ৫২% ফসফরাস প্রয়োজন।
পটাশিয়াম মুলত খাদ্যের ৩৪% প্রয়োজন। তাই আমাদের এ সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে করে গাছগুলো পটাশিয়ার সঠিক ভাবে পায় সেদিকে। এছাড়াও গাছের গোড়ায় কলার খোসা গুড়া করে দিতে হবে। যদি কলার খোসার গুড়া না থাকে সেক্ষেত্রে কলার খোসা পানিতে পচিয়ে তা গাছের গোড়াতে দিতে পারেন। তাহলে গাছে মুকুলের পরিমান অনেক বেশি হয়ে থাকে।
পটাশিয়াম মুলত খাদ্যের ৩৪% প্রয়োজন। তাই আমাদের এ সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে করে গাছগুলো পটাশিয়ার সঠিক ভাবে পায় সেদিকে। এছাড়াও গাছের গোড়ায় কলার খোসা গুড়া করে দিতে হবে। যদি কলার খোসার গুড়া না থাকে সেক্ষেত্রে কলার খোসা পানিতে পচিয়ে তা গাছের গোড়াতে দিতে পারেন। তাহলে গাছে মুকুলের পরিমান অনেক বেশি হয়ে থাকে।
আম গাছের মুকুল ঝরা রোধ করার উপায়
বিভিন্ন কারনে আমগাছের মুকুল ঝরে পড়ে। এর মধ্যে কয়েকটি কারণ উল্লেখযোগ্য যা নিচে আলোচনা করা হলো।
তাই আপনি আক্রান্ত গাছকে প্রথমে সাধারণ পানি দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করে দুয়ে নিবেন। আপনি চাইলে পানিতে শ্যাম্পু দিয়েও ধুতে পারেন কোন সমস্যা নাই। আর এভাবে কোন ঔষধ ছাড়ায় আপনি আপনার গাছকে ছত্রাক থেকে মুক্তি দিতে পারেন। পরবর্তীতে যাতে আর না হয় সেজন্য গরুর গবর পানিতে মিশ্রিত করেও দিতে পারেন।
ছত্রাকের আক্রমন
ছত্রাকের আক্রমনের কারনে আম গাছের মুকুলের ব্যপক ক্ষতি হয়। এগুলো দেখতে সাদা সাদা ছাতার মত। একে অনেকে ফ্যাংগাশ ও কলে থাকে। এটি মুলত পাতার গোড়া এবং যে স্থান দিয়ে মুকুল বের হবে সেখানে হয়ে থাকে। এটি হলে মুকুল বের হওয়ার সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাই আপনি ঘরোয়া উপায়ে এ ছত্রাক দুর করতে পারেন। এ টিপস্ এর মাধ্যমে।তাই আপনি আক্রান্ত গাছকে প্রথমে সাধারণ পানি দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করে দুয়ে নিবেন। আপনি চাইলে পানিতে শ্যাম্পু দিয়েও ধুতে পারেন কোন সমস্যা নাই। আর এভাবে কোন ঔষধ ছাড়ায় আপনি আপনার গাছকে ছত্রাক থেকে মুক্তি দিতে পারেন। পরবর্তীতে যাতে আর না হয় সেজন্য গরুর গবর পানিতে মিশ্রিত করেও দিতে পারেন।
পোকামাকড়ের আক্রমন
আম গাছে অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় কুশিতে অনেক ছোট ছোট পোকা দেখা যায়। এ পোকাগুলো উক্ত ডোগার রস খেয়ে ফেলে এতে করে গাছের মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। তাই এই সমস্যা দুর করার জন্য আপনাকে দুই বার পুরো গাছে ষ্প্রে করতে হবে। প্রথম স্প্রে হলো যখন মুকুল ফুটবে তখন।
ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপ তরল হলে ০.৭৫ মিলি অথবা দানাদার হলো ০.২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে এবং ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ২ গ্রাম মিশিয়ে গাছের ডগা থেকে গাছের গোড়া পর্যন্ত ভালো ভাবে ধুয়ে দিতে হবে। কারন অনেক সময় মা পোকাগুলো গাছের গোড়ার দিকে অবস্থান করে। দ্বিতীয় স্প্রে একই নিয়মে করতে হবে যখন গাছের আমের গুটিগুলো মটর দানার মত সাইজ হয়ে থাকে তখন।
ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপ তরল হলে ০.৭৫ মিলি অথবা দানাদার হলো ০.২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে এবং ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ২ গ্রাম মিশিয়ে গাছের ডগা থেকে গাছের গোড়া পর্যন্ত ভালো ভাবে ধুয়ে দিতে হবে। কারন অনেক সময় মা পোকাগুলো গাছের গোড়ার দিকে অবস্থান করে। দ্বিতীয় স্প্রে একই নিয়মে করতে হবে যখন গাছের আমের গুটিগুলো মটর দানার মত সাইজ হয়ে থাকে তখন।
পনির অভাব
গাছে মুকুলের সময় পর্যাপ্ত পরিমান পানি গাছ শোষন করতে না পারলে গাছের মুকুল ঝরে যায়। এক্ষেত্রে গাছে স্প্রে মাধ্যমে এবং গাছের গোড়ায় পানি নিয়মিত দিতে হবে।তাপমাত্রার তারতম্য
অনেক সময় তাপমাত্রার তারতম্যর কারনেও গাছের মুকুল ঝরে যায়। এছা ঘন কুয়াশা আমের মুকুলের ব্যপক ক্ষতি করে। তাই গাছকে এ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য গাছ চারিদিকে বেস্তনি দিয়ে ঘিরে দিতে পারেন।উপসংহার
আম ফলের মধ্যে অন্যতম একটি ফল। এটি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হয়ে থাকে। আম উৎপাদন করে অনেকে সাবলম্বি হয়েছে। কিন্তু আম গাছের সঠিক পরিচর্যা না করার কারনে আমাদের দেশের চাষী ভায়েরা আশানারুপ লাভবান হতে পারেনা। তাই আমগাছের পরিচর্যা করতে হবে আম গাছে মুকুল আসার পূর্ব হতেই।
লেখকের মন্তব্য: উক্ত পোস্ট বিভিন্ন দিক থেকে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি পোষ্টটি পড়ে উপকৃত হবেন এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে অন্যকে পড়তে পোষ্টটি শেয়ার করে দিবেন। ধন্যবাদ
আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url