দাঁত সুন্দর করার উপায়-দাঁতের যত্ন কিভাবে নিবেন

 সুন্দর ঝকঝকে দাতের সুন্দর হাসি, আমরা সকলে ভালো বাসি। কিন্তু আমরা অনেকে অবহেলায় অযত্নে দাঁতের সৌন্দয্য ধরে রাখতে পারিনা। এতে করে আমরা দাঁতের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগি। এ দাঁতকে টিকিয়ে রাখা এবং দাঁতের যত্ন নেওয়ার নিজ নিজ দায়িত্ব। দাঁত সুন্দর করার উপায়-দাঁতের যত্ন যেভাবে নিবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

দাঁত সকল মানুষের সৌন্দয্যে একটি উন্নতম উপাদান। যার দাঁত যত সুন্দর তার হাসি তত সুন্দর। তাই আমাদের সকলের উচিত দাঁতের সৌন্দয্য রক্ষা করা। তাই আসুন আমরা দাঁত সুন্দর করার এবং দাঁতের সুস্থতা রক্ষা করার ক্ষেত্রে নিচের কিছু নির্দেশনা গুলো পড়ে নেয়।

ভূমিকাঃ

দাঁত মানুষের সৌন্দয্যের একটি অন্যতম ও উল্লেখযোগ্য উপাদান। একটি মানুষের সৌন্দয্যের অনেকটাই নির্ভর করে দাঁতের উপর। সুন্দর দাঁত সকল মানুষের স্বপ্ন। তাই আসুন নিজের দাঁত সুন্দর করার উপায় জেনে নিয়।

দাঁতের যত্ন যে ভাবে নিবেন:-

রাতে ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে উঠার পর দাঁত ব্রাশ করা জরুরি। শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত দাঁত ব্রাশ করা যাবেনা, কয়লা বা ছাই ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন তিন মিনিটের অধিক সময় বা বারবার দাঁত ব্রাশ করবেন না, তিন মাসের অধিক সময় এক ব্রাশ ব্যবহার এবং একটি ব্রাশ একাধিক লোক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। খাদ্যাভ্যাস: মুখের জন্য উপকারী সুষম আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।

দাঁতে ব্যথা হলে কি করবেন:-

যখন দাঁতে ব্যথা হয় তখন তুলোয় লবঙ্গ তেল দিন এবং বেদনাদায়ক দাঁতের নীচে এটি রাখুন। কিছু লবঙ্গ এক গ্লাস জলে উষ্ণ করে, যখন জল এক চতুর্থাংশ থাকে তখন এই জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন, আপনার দাঁতের ব্যাথা নিরাময় হবে। রসুন- দুটো কালো রসুন নিন এবং প্যান দিয়ে ঐগুলোকে চেপে যে দাঁতে ব্যথা হচ্ছে তাতে চাপুন।

কিভাবে দাঁত ব্রাশ করবেন:-

আপনার দাঁত সঠিক ভাবে ব্রাশ করতে মাড়ির নিচের অংশ পর্যন্ত পরিষ্কার করতে প্রতিটি দাঁতের আশপাশে ব্রাশ করুন। পেছনের দাঁতের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবখানে ব্রাশ করুন। এক প্রান্ত থেকে শুরু করে অপর প্রান্ত পর্যন্ত অথবা ওপর থেকে নিচের দিকে ব্রাশ করুন। ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করতে এক থেকে দুই মিনিট সময় নিন।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে যে ভাবে দাঁতের যত্ন নিবেন:-

হলদেভাব কাটিয়ে বাড়িতেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁত করে তুলুন ঝকঝকে সাদা
সুন্দর ঝকঝকে সাদা দাঁতের হাসির কোনও তুলনাই হয় না। তাই এই হাসিকে রক্ষা করার দায়িত্ব আপনারই। এমতাবস্থায় দাঁতের সাদাটে ভাব যেন চলে না যায় সেদিকে সর্তক দৃষ্টি রাখুন। আর দাঁত হলদেটে ভাব যদি বুঝতে পারেন তহলে সেটি পরিষ্কার করুন ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়ে।

কখন কখন দাঁত ব্রাশ করবেন:-

সচেতন মানুষমাত্রই সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করেন এটা আমরা সবাই জানি। অনেকেই আবার রাতের বেলা শোবার আগে দাঁত ব্রাশ করেন। আমরা যে কারনে দাঁত ব্রাশ করা বা দাঁত মাজি তার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দাঁত পরিষ্কার রাখা, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যদ্রব্য দূর করা, এবং দাঁত ক্ষয়রোগের কবল থেকে রক্ষা পাবে।

কাজেই দাঁত যত বেশি সময় ধরে পরিষ্কার রাখা যায়, ততই মঙ্গল। কিন্তু অতিরিক্ত সময় ধরে দাঁত ব্রাশ করলে আবার দাঁতের জন ক্ষতি হয়ে পড়ে। তাই আমরা ২-৩ মিনিটের বেশি সময় ব্রাশ করবো না।আমরা যদি রাতে খাওয়ার পর শোবার আগে দাঁত মাজি তাহলে আমাদের দাঁত সারা রাত ধরে পরিষ্কার থাকে। সুতরাং শোবার আগে দাঁত ব্রাশ করা অবশ্যই আমার উচিত।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সকালবেলা দাঁত মাজা প্রসঙ্গে। অধিকাংশ লোকই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে দাঁত মাজাকে গুরুত্ব দেন। আসলে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই যে দাঁত মাজতে হবে, এ ধারণা ঠিক নয়। বিশেষ করে যদি আগের রাতে দাঁত ব্রাশ করা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী ভোরে দাঁত মাজার গুরুত্ব অনেকটাই কমে যায়।

এ ক্ষেত্রে ঘুম উঠে মুখ ধুয়ে ভালো করে কুলকুচি করে নেওয়াই যথেষ্ট। তাহলে কি সকালে দাঁত মাজার দরকার নেই? আছে, অবশ্যই আছে। তবে তা ঘুম থেকে উঠেই নয়। সকালে দাঁত মাজতে হবে নাশতা খাওয়ার পর। নাশতা খাওয়ার পর দাঁতের গায়ে খাবারের ক্ষুদ্রকণা জমে। তাই নাশতা খাওয়ার পর দাঁত মাজলে দাঁত অনেক সময় ধরে পরিষ্কার থাকে।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি কেউ দাঁত মাজে আর তারপর নাশতা করে, তাহলে নাশতা থেকে প্রাপ্ত কিছু খাদ্যকণা দাঁতের গায়ে লেগে যায়। আর এই খাদ্যকণা দুপুরে খাবার গ্রহণের সময় আরো একটু ভারী ও পুরু হয়। এতে দাঁতের ক্ষয়রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এ সম্পর্কে দন্ত্য বিশেষজ্ঞ ডা. অরূপ রতন চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন, সকালে নাশতার পর দাঁত মাজা ভালো।

বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যাঁরা দাঁত মাজেন, তাঁদের মধ্যে দন্ত্য রোগের প্রকোপ অনেক কম। কাজেই সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে কুলি করে নাশতা করুন এবং তারপর দাঁত ব্রাশ করুন।

দাঁতের নিচের কালো দাগ হলে কি করবেন:-

দাঁতের যত্ন নেওয়ার পরেও কেন এতে কালো দাগ পড়ে? দাঁতে কালো দাগের প্রধানতম কারণ দন্তমল বা ডেন্টাল প্ল্যাক। আমরা যা খাই, তার কিছু কণা দাঁতের ফাঁকে বা ওপরে জমে থাকে; পরে এগুলো শক্ত আবরণে পরিণত হয়। একে বলে দন্তমল। এই জমে থাকা খাদ্যকণা, ময়লা ইত্যাদি দাঁতের ওপর ও ফাঁকে কালো দাগ তৈরি করে।

এ ছাড়া পান, সুপারি, জর্দা, তামাক বা ধূমপান দাঁতে কালো দাগ তৈরির জন্য দায়ী। দন্তমলের কারণে হয় মাড়ির প্রদাহ ও সংক্রমণ। দন্তক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে, মুখে দুর্গন্ধ হয়। তাই নিয়মিত স্কেলিংয়ের মাধ্যমে দন্তমল দূর করা উচিত। আবার দাঁতে ফাঁক বা ক্ষয় থাকলে ময়লা বা খাদ্যকণা জমে বেশি। তাই ফাঁক পূরণে ডেন্টাল ফিলিং করে নেওয়া উচিত।

দাঁতের কালো দাগ দুর করতে কিছুতথ্যঃ-

প্রতিদিন নিয়ম মেনে দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
তামাক জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।

উপসংহারঃ

উপরোক্ত তথ্যের আলোকে এ কথা বলা যায় যে, দাঁত একটি অমূল্য সম্পদ। তাই আমাদের উচিত সময় থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝা। দাঁত না থাকলে আমরা আসলে বুঝতে পারো যে আল্লাহর দান দাঁন আমাদের কাছে কতটা মূল্যে। তাই অবহেলায় ও অযত্নে না রেখে উপরোক্ত নিয়ম মেনে দাঁতের সঠিক যত্ন নিবো এবং দাঁতের সৌন্দয্য ‍বৃদ্ধি করবো।

লেখোকের মতামতঃ-
দাঁতে কালো দাগ যাতে না হয় এবং দন্তমল প্রতিরোধে কিছু পরামর্শ রয়েছে। প্রতিদিন দিনে দুবার নাশতার পর ও নৈশভোজের পর ভালো করে দাঁত ব্রাশ করুন। দাঁত ব্রাশের আগে ডেন্টাল ফ্লস দিয়ে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্যকণা ও ময়লা বের করে নিন।

উন্নত মানের মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করা ভালো। প্রতিদিন কিছু শক্ত ফল, যেমন: আপেল, আমলকী, পেয়ারা, আমড়া ইত্যাদি চিবিয়ে খান। কিছু শাকসবজি, যেমন: শসা, টমেটো, গাজর ইত্যাদি নিয়মিত খান। ধূমপান বাদ দিন, পান, জর্দা, গুল ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url