চাকুরি না ব্যবসা কোনটা ভালো

 বর্তমানে আমরা এমন একটা সময় পার করছি যে চাকুরি না ব্যবসা কোনটা ভালো এই কথা প্রতিনিয়ত ভেবে যাচ্ছি। আর এ ভাবনা সাধারণতন গ্রাজুয়েট শেষ করার পর আরো ভাবাচ্ছে আমাদের। আমাদের কাছে চাকুরি আর ব্যবসার মধ্যে আলাদা দৃষ্টি ভঙ্গি তৈরি করেছে আমাদের সমাজ। তাই আমাদের ব্যবসা ও চাকরি বলতে কি বুঝায় আগে জানা দরকার।

চাকুরি না ব্যবসা কোনটা ভালো

কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডার মত দেশগুলোর জনগন কোন কাজকেই ছোট মনে করেনা। তারা সাধারণত সকল কাজকে সমান চোখে বা দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে থাকে। সমাজের যে সব চেয়ে ছোট কাজ করে তাকেও যে প্রাধান্য দিয়ে থাকে তা একজন ভালো চাকুরিজীবিকেও একই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে থাকে। আর আজ সেই জন্য ঐ সমস্ত দেশগুলো এত উন্নত।

ভূমিকা

আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে চাকরি আর ব্যবসা নিয়ে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। কেউ চাকরিকে বেশি প্রাধান্য দেয় আবার কেও ব্যবসাকে। কিন্তু সেটি বড় কথা নয় সকলে তার নিজ নিজ পজিশন অনুযায়ী চাকরি বা ব্যবসা করে থাকে। কিন্তু আমরা কি বিশ্বাস করি আমরা সকলে কোন না কোন ভাবে ব্যবসার সাথেই জড়িত। তাই এ বিষয়ে নিচে আমরা বিস্তারিক আলোচনা করবো।

চাকুরি না ব্যবসা কোনটা ভালো

এই কথার আলোকে আসুন ধরে নেওয়া যাক একজন ব্যক্তি পুরাতন জিনিসপত্র ক্রয় বিক্রয় করে থাকে তাই একে একজন ব্যবসায়ী বলাই যায়। অপর দিকে কোন এক ব্যক্তি সরকারি একজন অফিসার। কিন্তু যিনি পুরাতন জিনিপত্র ক্রয় বিক্রয় করে বাসে ৫০ হাজার টাকা লাভ করে। অপর দিকে যিনি সরকারি কর্মকর্তা তিনি ৩৫ হাজার টাকা বেতন পান। তাহলে আপনি নিজেই বুঝবেন কোনটা ভালো। 

কিন্তু এখানে প্রশ্ন হলো সমাজের সামাজিক দৃষ্টি ভঙ্গি। আমরা লক্ষ করে দেখি আমাদের সমাজের মানুষকে যদি উপরোক্ত ব্যক্তির মধ্যে বেচে নিতে বলা হয় তাহলে তারা অবশ্যই চাকুরিজিবীকে বেচে নিবে। কারন আমাদের সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গি চাকুরির দিকেই বেশি। কিন্তু এ বিষয়ে আরো কিছু উধাহরণ আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে চাই। 

আরো জানুন: উন্নত জাতের গরু পালন - কম পুঁজিতে গরু পালন

আপনি কি করবেন সেটা আপনার মোনকে নিজে প্রশ্ন করুন। কারন চাকরি হলো কারো অধিনে কাজ করা এবং ব্যবসা হলো আপনি নিজেই মালিক এবং আপনার অধিনে অনেকে কাজ করবে। আপনি একটা অফিসের কর্ণধার বা বস যেখানে আপনার কথায় অনেকে কাজ করবে। অপর দিকে আপনি যেখাকে চাকরি করবেন সেখানে আপনার কথা শেষ কথা নয় আপনার উপরে একজন থাকবে।

ব্যবসা ও চাকরি বলতে কি বুঝায়

আমরা সকলে কোন না কোন ভাবে ব্যবসার সাথে জড়িত। কথাটি শুনেত অবাক হচ্ছে তাই না। হা ঠিকই শুনেছেন তাই আমাদের ব্যবসা ও চাকরি বলতে কি বুঝায় তা জানা দরকার। যেমন ধরেন আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন সেটা আপনার কাছে চাকরি মনে হলেও কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে সেটি ব্যবসা। 

ধরেন আপনি একটি এনজিও তে চাকরি করেন তাহলে সেটি হলো আপনার কাছে চাকরি। কিন্তু সেই এনজিও এর মালিক এটিকে ব্যবসা হিসাবে ধরে নিয়েছে। এমনি ভাবে আপনি যদি কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান কিন্তু সরকারের কাছে একটি ব্যবসা। 

এছাড়াও যদি কোন শিক্ষককে বা ডাক্তারের পেশাকে আমরা কয়েক দশক আগে মহত পেশা হিসাবে ভাবতাম তাও বর্তমানেেএকটি ব্যবসা। কোন শিক্ষক বা ডাক্তার সে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত আছে সেই প্রতিষ্ঠানের কাছে সেটি একটি ব্যবসা।

ব্যবসা করতে হলে আপনাকে অন্যান্য প্রতিপক্ষের সাথে কমপিটিশন করে ব্যবসা করতে হবে। আপনার প্রতিপক্ষকে খুজে বের করতে হবে। তাদের সেবা বা পন্যের সাথে আপনারটির তুলনা করে সবসময় আপনাকে সেরাটা দেওয়ার মানসিকতা করতে হবে। কোন ভাবে প্রতারনা করা কথা চিন্তাও করা যাবে না।

তাহলে আসুন এখন চাকরি আর ব্যবসার করতে আমাদের কি থাকা দরকার এবং আমাদের কোন কাজের জন্য কেমন পরিশ্রম করতে হবে। উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে হয়তো বুঝতে পেরেছেন আসলে ব্যবসা কি ও চাকরি কি।

চাকরির কার্যক্রম সমূহ

  • চাকরি করলে আপনি একটি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার কাজ সিমাবন্ধ থাকে।
  • এর নিদিষ্টি সময় আছে।
  • ঝড়, বৃষ্টি, খড়া সব মৌসুমেয় আপনি একটি নিদিষ্ট পরিমান বেতন পাবের যার কোন কম বেশি হওয়ার সুযোগ নাই।
  • পরিবারকে যথেষ্ট সময় দেওয়া যায়।
  • সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটি ভোগ করা যায়।
  • চাকরি শেষে একটি নিদিষ্ট পরিমান ফান্ড পাওয়া যায়।
  • কোন রিক্স নাই।

ব্যবসার কার্যক্রম সমূহ 

  • ব্যবসার জন্য কোন নিদিষ্ট সময় বাধা নায় কোন কোন সময় আপনাকে ১৬-১৮ ঘন্টা এর পেছনে সময় দিতে হবে।
  • প্রচুর কাজ, এর কোন ফিক্সট সময় নাই।
  • অনেক সময় ব্যবসায় উত্তন পত্তন আছে।
  • নিষ্টিষ্ট কোন আয়সিমা নাই। কোন কম আবার কখনো বেশি হয়ে থাকে।
  • পরিবারকে তুলনামুলক কম কময় দেওয়া যায়।
  • যখন লস বা লোকশান হবে তখন আপনাকে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়া যাবে না।
  • প্রচুর কেয়ারিয় হতে হবে। যেমন কোন কাষ্টমারের সাথে বা গ্রাহকের সাথে কোন ভাবে খারাপ আচারন করা যাবে না।
  • সব সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।
  • কর্মচারীর সাথে সব সময় ভালো ব্যবহার করতে হবে।
  • আপনাকে অনেক দোড়াতে হবে অথাৎ লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে।
  • ব্যবসায় লস বা ক্ষতি হলেও আপনাকে উঠে ডাড়ানোর মনোভা রাখতে হবে।
  • ব্যবসায় বিনিয়োগ করার জন্য অর্থের প্রয়োজন আছে।
  • ভালো পন্য বা সেবা প্রদান করতে হবে।

এবার আসুন চাকরি ও ব্যবসায় পরিবারের উপর প্রভাব 

চাকরি মাধ্যমে পরিবারের উপর প্রভাব

চাকরি করে একটি পরিবার অনায়াসে সুখে শান্তিতে হলে যায়। চাকরি শেষে একটি ফান্ড পাওয়া যায় যার মাধ্যমে পরবর্তী সময় অনায়াসে কেটে যায়। সেই জন্য কোন চিন্তা করার প্রয়োজন পড়েনা। কিন্তু এটাই কি শেষ কথা। না বন্ধুরা এটা শেষ কথা নয়। যে পরিবার চাকরি নির্ভর তার সন্তানদের কিন্তু চাকরি পাওয়া বাধ্যতামুল হয়ে পড়ে। কারন তারা চাকরিকেই শুধু বেচে নিয়েয়ে।


এতে করে তার সন্তানদের চলা কিছুটা হলেও প্রথম সমস্যার হয়ে পড়ে। এর চাকরির পিছনে তাদেরকে ছুটে চলতে হয়

ব্যবসায় পরিবারের উপর প্রভাব

একটি পরিবার যদি ব্যবসা করে থাকে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে ভবিষ্যতে তার সন্তানদের সাধারণত চাকরির জন্য অতো চিন্তা করতে হবে না। কারন সে ছোট বেলা থেকে ব্যবসার সাথে জড়িত। ধরে নেওয়া যাক সে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক নয় তাও সে পরিবারের মাধ্যমে ব্যবসার প্রতি একটি অভিজ্ঞতা এমনি এমনি তৈরি হয়ে যায়।

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানা গেন যে, চাকরির একটি নিদিষ্ট বেতন আছে যার কম বেশি হওয়ার সুযোগ নাই কিন্তু অন্যের অধিনে হয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু চাকরি কোন নিদিষ্ট ইনকাম নাই বা সময় বাধা নাই। আপনি চাইলে অনেক কে আপনার অধিনস্ত হিসাবে কাজ করাতে পারেন। তবুবো আমাদের নিজেকে আরো জানার ও বুঝঅর সুযোগ দিতে হবে।

লেখকের মন্তব্য - আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন তাহলে আপনি ‍বুঝতে পারবেন আপনি কি করবেন। । চাকরি করতে হলে আপনাকে অন্যের হয়ে কাজ করতে হবে আর ব্যবসা করতে হলে আপনি নিজেই একজন মালিক হয়ে অন্যকে চাকরির স্থান তৈরি করে দিতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url