নিম গাছের বৈশিষ্ট্য

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে এমন একটি গরুত্বপূর্ণ গাছ নিয়ে আলোচনা করবো যেটি আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকাতেই পাওয়া যায়। আর এ গাছটির নাম নিম গাছ। এটি এমন একটি গাছ যার ডাল, পাতা ও গাছের বাকল (ছালের) রস সকল কিছুই মানুষের জীবেনের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের অনেকেরই নিম গাছের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তেমন কোন ধানরা নাই।
নিম গাছের বৈশিষ্ট্য

নিম গাছ আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া গেলেও বিশেষ করে রাস্তার পাশে বেশি দেখা যায়। নিম গাছ বিশেষ করে ভারত এবং বাংলাদেশে বেশি জন্মে। এছাড়াও ওমানের বিভিন্ন এলাকাতে নিম গাছের দেখা মিলে। এ গাছের উচ্চতা সাধারনত ৫০ ফুট এর মধ্যে সীমাবন্ধতা হয়ে থাকে। এ গাছের পাতা চিকন ও খাজ কাটা খাজ কাটা হয়ে থকে।

ভূমিকা

নিম গাছ বিভিন্ন ভাবে মানুষের উপকারে করে থাকে। এ গাছের পাতা, ফুল, ফল, ডাল, বাকল, কাঠ এমনকি এ গাছের ছাঁয়াও মানুষের উপকার করে সমান ভাবে। কিন্তু আমরা এ বিশেষ গুনাগুন থাকা সত্ত্বেও না বুঝে এ গাছ কটে ফেলছি। এ গাছকে একটি ভেষজ ঔষধী গাছও বলো হয়ে থাকে। এ গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Azadirachta indica. আসুন এবার নিম গাছের বিভিন্ন গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিয়।

নিম পাতার উপকারীতা

নিম পাতা মানুষের বেশ উপকারী একটি ভেজষ। এ পাতার দ্বারা শরীর, ত্বক ও চুল ইত্যাদি ভালো রাখার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সাহায্য করে। এতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি যা কিডনি ও লিভারের বিভিন্ন  সমস্যায় বিশেষ উপকারী নিম পাতা। এছাড়াও নিম পাতার রস দিয়ে তৈরি বিশেষ পানিয় আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে।
 
 
যেখাবে নিম পাতার বিশেষ পানীয় তৈরি করবেন। এর জন্য আপনাকে প্রথমত ২-৩ গ্লাস পানি ভালো করে ফুটি নিতে হবে এবং পানি দিয়ে ধুরে পরিষ্কার করে রাখা নিম পাতা গরম পানিতে দিয়ে ফুটতে থাকা পানির মধ্যে আদা ও গোলমরিচ দিয়ে দিন। যখন দেখবেন পানি অর্ধেক হযে গেছে তার পর সেই পানি ভালো করে ছেঁকে নিন এবং এর মধ্যে প্রয়োজন মত মধু ও লেবু মিশিয়ে খেতে হবে।


মনে রাখবেন কখনো একবার করে রেখে দিবেন না। প্রতিদিনের পানীয় প্রতিদিন তৈরি করবেন এবং তা সকালে খালী পেটে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। খাওয়ার ১ ঘন্টা পর অন্য সাভাবিক খাবার খান। এতে করে আপনার ওজন কমবে ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়েন্ত্রনে থাকবে এবং রক্তে সুগারের পরিমান কমবে।

নিম গাছের ছালের উপকারিতা

নিম গাছের ছল বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন ম্যালেরিয়া, পেট ও অন্ত্রের আলসার, ব্যথা, জ্বর, চর্মরোগ নিরাময়ে বিশেষ উপযোগী একটি ঔষধ। কোথাও ব্যাথা হলে নিম গাছেল ছাল গরম পানিতে ফুটিয়ে ব্যথা স্থানে উক্ত পানি দিয়ে স্যাত দিতে থাকলে দ্রুত ব্যথা ভালো হয়। জ্বর ও গরু বা ছাগলের খাবারে অরুচি থাকলে নিম গাছের ছালের রস করে খাওয়ালে ‍উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও নিম

নিম ফুলের উপকারিতা

 
নিম ফুলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক যা আযুর্বেদে সোরিয়াসিস এবং একজিমার চিকিৎসায় বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে নিম ফুল।একাধিক চর্মরোগের মহা ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয় নিম ফুল। নিম ফুলের শরবত পান করতে পারলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। ত্বক উজ্জল ও মশ্রিনকরার জন্য নিম ফুলকে গুঁড়া করে ত্বকের ওপর লাগাতে পারেন। এছাড়াও নিম ফুল পিত্ত কমাতে, কফ নিয়ন্ত্রণে এবং অন্ত্রের কৃমির চিকিৎসার জন্য অনেক আংশে ব্যবহার হয়ে থাকে।

নিম তেলের উপকারিতা

নিম তেল বিশেষ একটি উপকারি তেল হিসাবে অনেকের মন্তব্য রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এ তেলের জুড়ি মেলা ভার। এ তেল নানা সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এ তেল ব্যবহারে চুলের সমস্যা সমাধান হয়ে থাকে। এছাড়াও নিমের তেল হাতে পায়ে মালিশ করলে মাছি ও মশার উত্যক্ত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

যার মাথায় খুশকি রয়েছে তারা অর্গানিক শ্যাম্প কিনে ব্যবহার করতে পারেন। কিছু কিছু শ্যাম্পু আছে যেগুলোতে নিমের তেল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর আপনি যদি উক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকে তাহলে আপনার খুশকির সমস্যা বহুগুল কমে যাবে। নিমের তেল ব্যবহার করে থাকলে আপনার চুল অন্তত ফ্রিজ হয়ে থাকবে না।

নিম ফুলের মধুর উপকারিতা

আমাদের বিভিন্ন ভাবে মধু উপকারে আসে। মধুর গুনাবলি বলে শেষ করা যায় না। বলা হয়ে থাকে মধুতে রয়েছে সকল রোগের উপশম। বিভিন্ন ফুল হতে মধু হয়ে থাকে। তন্মদ্ধে নিম ফুলের মধু বিশেষ স্বাদযুক্ত ও উপকারি। নিম গাছ তুলনামুলক ভাবে কম থাকায় এ মধুর উৎপাদন কম হয়ে থাকে। তবে নিম ফুল থেকে উৎপাদিত মধু বিশেষ উপকারী।

নিম গাছের গাঠ ও ডালের উপকারিতা

আপনি বাজার থেকে কিনে ব্রাশ বা পেস্ট ব্যবহার না করে যদি নিয়মিত নিম গাছের ডাল দিয়ে দাঁত মেজে থাকেন তাহলে আশা করা যায় আপনার দাতে কোন সমস্যা থাকবেনা। আপনার দাতের মাড়ি ফোলা, রক্তপড়া, ইত্যাদি দুর করে আপনার দাতকে করে শক্ত, দুর্গন্ধ মুক্ত ও ঝকঝকে দাত।

এছাড়াও নিম গাছের কাছ দিয়ে তৈরি আসবাবপত্র খুব ভালো মানের হয়ে থাকে। এতে সহজে ঘুন (পোকার) আক্রমন করতে পারেনা। যার ফলে উক্ত গাছের কাছ দিয়ে তৈরি আবসাবপত্র নিঃসন্দেহে আপনি ব্যবহার করতে পারেন।

নিম গাছের ছায়া

নিম গাছেল এমন একটি গাছ যে খাছের ছায়াতে উপকার রয়েছে। আপনি যদি নিম গাছের ছায়ায় থাকের তাহলে আপনি বিভিন্ন সমস্যার ও রোগ বালাই থেকে মুক্তি পাবেন। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন নিম গাছের বাতাশ হয়ে থাকে পরিশুদ্ধ, পরিষ্কার ও নির্মল। এ গাছের অক্সিজেনও মানুষের বিভিন্ন উপকার করে থাকে।

উপসংহার

নিম গাছ এমন একটি গাছ যার উপকার বলে শেষ করা যায় না। এ গাছের সকল কিছুই মানুষের উপকারে আসে। তাই আসুন আমরা পরিবেশকে বাচাতে এমনকি নিজেদের দৈনন্দিন কাজের জন্যে নিম গাছ রোপন করি। আমরা প্রকৃতির এ বিশেষ গুনাবলি গ্রহণ করে নিজে সুস্থ থাকি এবং অন্যকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করি।

লেখকের মন্তব্যঃ প্রিয় পাঠক আশা করি নিম গাছের বিভিন্ন উপকারিতা জেনে আপনার উপকার হবে এবং আপনি নিজে সচেতন থেকে অন্যকে সচেতন করবেন। গাছ লাগান এবং পরিবেশ, দেশ ও জাতিকে রক্ষা করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপডেট ব্লগ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url